কালীগঞ্জের মোলান্দিতে নাবালিকা তামান্না খাতুনের মৃত্যুতে বিচার চেয়ে আন্দোলনে নেমেছে বাম কর্মী সমর্থকরা। কিন্তু, বিচার চাওয়া কি অপরাধ? এমনই প্রশ্ন তুলছে নদিয়ার কালীগঞ্জের মোলান্দি গ্রামের বাসিন্দারা। তামান্নার মৃত্যুর ঘটনার পর যাঁরা সরব হয়েছিলেন, এবার সেই প্রতিবাদীদেরই নিশানা করেছে পুলিশ বলে অভিযোগ। মধ্যরাতে গ্রামে হানা দিয়ে পুরনো মামলার অভিযোগে কয়েকজনকে গ্রেফতার করতে গিয়ে ব্যাপক লাঠিচার্জ করে পুলিশ। লাঠির আঘাতে আহত হয়েছেন একাধিক পুরুষ, এমনকি মহিলা ও শিশুরাও। উঠেছে শ্লীলতাহানির অভিযোগও। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা গ্রামে।
আরও পড়ুন: তামান্নার মৃত্যুর তদন্তে অসন্তুষ্ট পরিবার, তদন্তকারী অফিসার বদল করলেন এসপি
স্থানীয় সূত্রে খবর, সিপিএম কর্মী শেখ সাদ্দাম ও সুখ মহম্মদ শেখের বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। পুরনো একটি মামলায় অভিযুক্ত এই দুইজনকে গ্রেফতার করতে গেলে পরিবার ও প্রতিবেশীরা বাধা দেন। প্রথমে পরিস্থিতি সামাল দিতে চেষ্টা করলেও পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে বিক্ষোভকারীদের উপর লাঠিচার্জ শুরু করে বলে অভিযোগ।
সিপিএমের দাবি, শুধু অভিযুক্ত নয়, তামান্নার মৃত্যুতে যাঁরা বিচার চেয়ে আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই এই পুলিশের অভিযানের শিকার হয়েছেন। আহতদের মধ্যে রয়েছেন অন্তত ৯ জন মহিলা। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন, আহতদের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে গেলেও তা গ্রহণ করা হয়নি।
এই ঘটনাকে 'রাজনৈতিক প্রতিশোধ' বলে দাবি করছেন স্থানীয় বাম নেতা দেবাশিস আচার্য। তাঁর কথায়, "তামান্নার মৃত্যুতে যারা প্রতিবাদ করেছিল, এখন তাদের বাড়িতে রাতের অন্ধকারে হানা দিয়ে পুলিশ ধরপাকড় চালাচ্ছে। এটা গণতান্ত্রিক অধিকারের উপর সরাসরি আঘাত।
গ্রেফতার হওয়া তিনজনকে ইতিমধ্যেই কৃষ্ণনগর আদালতে তোলা হয়েছে।এদিকে মোলান্দি গ্রামে পরিস্থিতি থমথমে। পুলিশি হানার রাতে গ্রাম জুড়ে যে আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে, তা এখনও কাটেনি। এই ঘটনার নেপথ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী। তবে প্রশাসনের তরফে এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।