মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে প্রশিক্ষিত ও দুর্ধর্ষ সেনাদলের অন্যতম হল সিল টিম। সম্প্রতি, একটি চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালে মার্কিন নেভি সিলের একটি এলিট টিম (যার পোশাকি নাম SEAL Team 6) উত্তর কোরিয়ায় একটি গুপ্তচরবৃত্তির অভিযানে গিয়েছিল। মিশনের উদ্দেশ্য ছিল উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের ব্যক্তিগত পর্যায়ে একটি স্পাই ডিভাইস বসানো। স্পাই ডিভাইসের অর্থ যা গোপনে নজরদারি চালাতে পারে। এই মিশনের পরিকল্পনা ছিল অত্যন্ত জটিল এবং গোপনীয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশেই নাকি এই অভিযান করা হয়।
আরও পড়ুন - ইউক্রেনের মন্ত্রীভবনে ৮০০ ড্রোন হামলা! পাল্টা হামলায় আগুন ধরল রাশিয়ার অয়েলপাইপে
অনুমোদন ছিল ট্রাম্পের
নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে এই অভিযানের অনুমোদন দিয়েছিলেন। নির্দিষ্ট এই অপারেশনের জন্য নেভি সিল সদস্যরা মাস ধরে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। তাদের পরিকল্পনা ছিল একটি নিউক্লিয়ার সাবমেরিন করে উত্তর কোরিয়ার উপকূলে পৌঁছানো। সেখান থেকে ছোট সাবমেরিনের সাহায্যে গোপনে তীরে গিয়ে স্পাই ডিভাইসটি স্থাপন করা। এরপর কোনও চিহ্ন না রেখে ফিরে আসা।
কেন সফল হল না মিশন?
তবে, মিশনটি আশানুরূপ সাফল্য পায়নি। রাতের অন্ধকারে এবং প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যে যখন সিল সদস্যরা উপকূলে পৌঁছায়, তখন অপ্রত্যাশিতভাবে একটি ছোট নৌকার মুখোমুখি পড়ে হয়। নৌকাটিতে থাকা ব্যক্তিরা বেসামরিক নাগরিক ছিল, যারা সম্ভবত মাছ ধরতে বা ঝিনুক সংগ্রহ করতে এসেছিল। সিল সদস্যরা তাদের পরিচয় জানতে পারেনি। নিজেদের অবস্থান প্রকাশ হয়ে যাওয়ার ভয়ে তাদের উপর গুলি চালায়। দুর্ভাগ্যবশত, এই ঘটনায় নৌকার সব আরোহী নিহত হয়।
আরও পড়ুন - বারবার ধর্ষণের শিকার নাবালিকা, ৭ মাস পর প্রসব মৃত সন্তান, গ্রেফতার অভিযুক্ত
এখন কী বলছেন ট্রাম্প
এই বিয়োগান্তক ঘটনার পর, সিল সদস্যরা ডিভাইসটি স্থাপন না করেই ফিরে আসে। যদিও মার্কিন সামরিক বাহিনীর একটি অভ্যন্তরীণ তদন্তে এই হত্যাকাণ্ডকে "যুদ্ধের নিয়ম অনুযায়ী যুক্তিসঙ্গত" বলে রায় দেওয়া হয়েছিল। তবুও এটি একটি বড় ধরনের বিপর্যয়। এই গোপন অভিযানটি যদি প্রকাশ্যে আসত, তাহলে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের পারমাণবিক আলোচনা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারত এবং তা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বড় ধরনের সংকট তৈরি করত। সম্প্রতি ট্রাম্পকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তিনি এই বিষয়ে কিছু জানেন না। তাঁকে খোঁজ নিতে হবে।