দেশজুড়ে ভিন রাজ্যে বিশেষ করে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের নির্যাতন, পুশব্যাকের মতো মতো ঘটনা ঘটছে। সেই আবহে বিজেপি শাসিত রাজস্থানে নিখোঁজ হয়ে গেলেন বাংলার এক পরিযায়ী শ্রমিক। ঘটনাটি সামনে আসতেই ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি। নিখোঁজ ওই শ্রমিকের নাম শ্রীমন্ত মাল (৪২)। বাড়ি পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুর থানার ফরিদপুর ছাতিমতলা এলাকায়।
আরও পড়ুন: বাংলার শ্রমিকদের ওপর নির্যাতনে ক্ষুব্ধ মন্ত্রী, BJP নেতাদের বেঁধে রাখার নিদান
পরিবার সূত্রে খবর, কাজের সন্ধানে গত জুলাই মাসে রাজস্থানের কোটারি এলাকায় যান শ্রীমন্ত। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দুর্গাপুরের তামলা এলাকার বাসিন্দা কাশীনাথ সিংহ। অভিযোগ, রান্নার কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কাশীনাথ তাঁকে রাজস্থানে নিয়ে গেলেও, পরে তাঁকে অন্য ধরনের কাজে নামতে বাধ্য করা হয়। গত ২৪ জুলাই শেষবার বাড়িতে ফোন করেছিলেন শ্রীমন্ত, সেটিও কাশীনাথের ফোন থেকে। পরিবারকে জানিয়েছিলেন, তিনি আর কাজ করতে চাইছেন না এবং বাড়ি ফিরে আসতে চান। কিন্তু সেই ফোনের পর থেকেই নিখোঁজ তিনি। পরিবারের বারবার চেষ্টা সত্ত্বেও তাঁর সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শ্রীমন্তের পরিবার। ঘটনায় স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী কল্যাণ পর্ষদ। রাজ্যসভার সাংসদ ও পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, তাঁরা ইতিমধ্যেই বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন এবং রাজস্থান প্রশাসনের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে।
শ্রীমন্তের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে দুর্গাপুর থানা। তবে, এখনও পর্যন্ত তাঁর কোনও খোঁজ মেলেনি। এদিকে, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতি প্রশাসনের মনোভাব এবং নিরাপত্তা নিয়ে ক্রমবর্ধমান অভিযোগের আবহেই এই ঘটনা নতুন করে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়িয়েছে। কিছুদিন আগেই মহারাষ্ট্রের নাগপুরে ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে গ্রেফতার হয়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাবাই সর্দার। পরে তাঁর পরিচয় স্পষ্ট হওয়ার পর মুক্তি মিললেও, সেই ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রতিনিধি দল পাঠাতে হয়েছিল। পরপর এই ধরনের ঘটনায় রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস অভিযোগ তুলেছে, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের নিরাপত্তা উপেক্ষিত। রাজস্থানে নিখোঁজ শ্রীমন্ত মাল আদৌ নিরাপদ আছেন কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে, বিষয়টি ঘিরে যে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে।