বোলপুর থানার আইসিকে কুকথা-কাণ্ডে আগাম জামিন তৃণমূলের নেতা তথা জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক অনুব্রত মণ্ডলের। সোমবার সকালে বোলপুর মহকুমা আদালতে দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। আত্মসমর্পণ করেন। এরপরেই অনুব্রতের আবেদন মেনে তাঁকে ১ হাজার বন্ডে আগামী জামিন দিয়েছেন বিচারক।সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বোলপুর মহকুমা আদালতে এসে আত্মসমর্পণ করেন অনুব্রত মণ্ডল। আত্মসমর্পণ করেই তিনি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বণিকব্রত দত্তের এজলাসে জামিনের আবেদন করেন। সূত্রের খবর, তাঁর অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে জামিনের আর্জি জানানো হয়। বিচারক দত্ত হাজার টাকার বন্ডে সেই জামিন মঞ্জুর করেছেন।এদিন সরকারি আইনজীবী ফিরোজ পাল তদন্তকারী আধিকারিকের বিরুদ্ধে নথিপত্র ঠিকমতো জমা দেওয়ার অভিযোগ করেন। অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী নূপুর দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আদালতে আগাম জামিন দিয়েছে। বয়স এবং শারীরিক অসুস্থতার যুক্তিতে তাঁকে আগাম জামিন দেয় আদালত।'বোলপুর থানার আইসি-কে তিনি কুকথা বলার অভিযোগ উঠেছে বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতার বিরুদ্ধে। তার ভিত্তিতে মামলা হয়েছিল। সেই মামলার ভিত্তিতে তাঁকে শান্তিনিকেতন থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল। এই মামলায় এর আগে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন এসডিপিও বোলপুর। তিনি এই মামলার তদন্তকারী অফিসার। সেই সময় প্রায় এক ঘণ্টা অনুব্রত মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেওয়া হয়। তারপর তিনি জামিনের আবেদন করেননি। এই প্রথম তিনি আত্মসমর্পণ করে আগাম জামিনের আবেদন করলেন। এ বিষয়ে এদিন কোনও কথা বলতে চাননি অনুব্রত। তিনি কোর্ট থেকে বেরিয়ে সরাসরি বাড়ির দিকে রওনা দেন।ঘটনার সূত্রপাত গত ২৯ মে একটি অডিও প্রকাশ্যে আসে। যেখানে বীরভূমের প্রাক্তন জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নাম করে এক ব্যক্তি বোলপুরের আইসি লিটন হালদারের সঙ্গে অকথ্য ভাষায় কথা বলছিলেন।ওই পুলিশ অফিসারের স্ত্রী এবং প্রয়াত মাকে নিয়ে অবধি কুৎসিত মন্তব্য করতে শোনা যায়।সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় এই অডিও ক্লিপ।যদিও সেই অডিও ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা। ওই ঘটনায় নাম জড়ায় অনুব্রত মণ্ডলের।পুলিশ অফিসারকে কদর্য আক্রমণের পর দলের কাছে নির্দেশ মতো ক্ষমা চেয়েছেন অনুব্রত।অন্যদিকে, পুলিশি তলব এড়াতে প্রথম দিন অসুস্থতা, দ্বিতীয় দিন বেডরেস্টের কথা বলেন বীরভূমের তৃণমূল নেতা। যদিও পরে পুলিশের কাছে হাজিরা দিয়েছেন তিনি। এই ঘটনায় জাতীয় মহিলা কমিশন জেলা পুলিশের কাছে রিপোর্ট চায়। জেলা পুলিশ সুপার রিপোর্ট পাঠান। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট হয়নি মহিলা কমিশন। ফের চিঠি পাঠায় কমিশন।সেই ঘটনার প্রায় তিন মাস পরে বোলপুর মহকুমা আদালতে আত্মসমর্পণ করে আগাম জামিন পেলেন অনুব্রত মণ্ডল।