কলকাতার দুই ক্লাব- ইস্টবেঙ্গল এফসি এবং মহমেডান এসসি যখন চলতি কলিঙ্গ সুপার কাপ থেকে বিদায় নিয়েছে, তখন এই টুর্নামেন্টে বাংলার ফুটবলের সম্মান আপাতত মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের হাতে। সেই সম্মান বজায় রাখতে গেলে আবার শনিবার কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের জিততে হবে কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি-র বিরুদ্ধে। যা পরিস্থিতি, তাতে কাজটা খুব একটা সোজা হবে না আইএসএলের জোড়া খেতাব জয়ীদের পক্ষে।
গত রবিবার প্রি কোয়ার্টার ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল এফসি-কে কার্যত হেলায় হারিয়েছে কেরালা ব্লাস্টার্স। নতুন কোচ আসার পর যেন বাড়তি তাগিদ যোগ হয়েছে দলে। স্বাভাবিক ভাবে মোহনবাগানের বিরুদ্ধেও উজ্জীবিত ফুটবল খেলে জয়ের ধারা ধরে রাখতে চাইবে কেরালা। এদিকে কেরালার বিরুদ্ধে মোহনবাগানের দ্বিতীয় সারির দল খেলতে নামবে। কারণ সুপার কাপে দ্বিতীয় সারির দলই বেছে নিয়েছে সবুজ-মেরুন। যে দলে আইএসএল মরশুমে সফল হওয়া কয়েক জন ভারতীয় ফুটবলার এবং বেশ কয়েক জন যুব ফুটবলার, যাঁরা রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশন ডেভলপমেন্ট লিগে (আরএফডিএল) মোহনবাগানকে চ্যাম্পিয়ন করেছে, তাঁরা রয়েছেন।
আরও পড়ুন: MI এখন KKR-এর অনুপ্রেরণা, PBKS-এর বিরুদ্ধে নামার আগে মইনের দাবি, ‘বেশির ভাগ ম্যাচই জিততে হবে’
দলের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দীপক টাংরিকে এবং কোচ হিসেবে থাকছেন হোসে মোলিনার সহকারী বাস্তব রায়। এঁরাই কলিঙ্গ সুপার কাপের চ্যালেঞ্জ সামলানোর জন্য ভুবনেশ্বরে পৌঁছেছেন। ব্লাস্টার্সের পূর্ণ শক্তির ফর্মে থাকা দলের বিরুদ্ধে কতটা লড়াই করতে পারবে সবুজ-মেরুনের এই বাহিনী, সেটাই হয়ে উঠতে চলেছে এই ম্যাচের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয়।
কলিঙ্গ সুপার কাপের জন্য যে দলের তালিকা প্রকাশ করেছে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট, তাতে রয়েছেন সহাল আব্দুল সামাদ, আশিক কুরুনিয়ান, দীপেন্দু বিশ্বাস, দীপক টাংরি, ধীরজ সিং, অভিষেক সূর্যবংশী, গ্লেন মার্টিন্স, অমনদীপ, সৌরভ ভানওয়ালা, সুহেল ভাট ও রবি বাহাদুর রানা। বাকিরা সবাই যুব দলের সদস্য। দলের সমস্ত বিদেশিদের ছুটি দিয়ে নিজেও দেশে ফিরে গিয়েছেন কোচ হোসে মোলিনা। ভুবনেশ্বরগামী দলে নবাগত পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড নুনো রেইসকে রাখা হয়েছে। তিনিই এই দলের একমাত্র বিদেশি।
আরও পড়ুন: ফের ব্যর্থ চেন্নাইয়ের ব্যাটিং, IPL-এ হল লজ্জার নজির, চিপকে CSK-কে প্রথম বার হারিয়ে ইতিহাস লিখল SRH
এই দল নিয়ে আদ্রিয়ান লুনা, নোয়া সাদাউই, জেসুস জিমিনি, কোয়ামে পেপরা, দানিশ ফারুক, ভিবিন মোহননদের বিরুদ্ধে সফল হওয়াটা যে সোজা কাজ হবে না, তা বোধহয় বুঝতেই পারছেন মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের সহকারী কোচ বাস্তব। তিনি তাই বলেওছেন, ‘আমরা প্রস্তুতির জন্য কম সময় পেয়েছি, তা ঠিকই। তবে আমাদের খেলোয়াড়রা সবাই ম্যাচের মধ্যেই ছিল। সিনিয়র দলের ছেলেরা আইএসএলে খেলছিল এবং জুনিয়ররা আরএফডিএল-এ চ্যাম্পিয়ন হয়ে এসেছে। ওদের কন্ডিশন, ফিটনেস বা চোট-আঘাত নিয়ে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। সমস্যাটা হল, নতুন কম্বিনেশনের মধ্যে বোঝাপড়া গড়ে তোলা।’
জুনিয়ররা এত বড় মঞ্চে খেলার সুযোগ পেয়েছে। তাই নিজেদের উজ্জীবিত করে তোলা এবং সেরা ফুটবলটা খেলা উচিত বলে মনে করেন সবুজ-মেরুন বাহিনীর কোচ। বলেন, ‘ওরা ছোট। এত বড় মঞ্চে খেলার সুযোগ পেয়ে আশা করি ওরা নিজেদের উজাড় করে দেবে। এই টুর্নামেন্টটা ওদের কাছে একটা বড় এক্সপোজার। নিজেদের প্রমাণ করার জায়গা। সিনিয়রদের সামনেও এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা, এখানে ভালো খেলে ভারতীয় দলে ফিরে যাওয়ার সুযোগ আছে তাদের সামনে। তাই সিনিয়র-জুনিয়র দু'পক্ষেরই ভালো খেলার তাগিদ রয়েছে। নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া তৈরি করে পরিবেশের সঙ্গে মানসিক ভাবে দ্রুত মানিয়ে নিয়ে ভাল খেলাই এখন ওদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ।’ কিন্তু এত দ্রুত বোঝাপড়া তৈরি করে ভালো খেলা সম্ভব? এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।