বিক্ষুব্ধ ছাত্র-যুব আন্দোলনে রবিবার থেকে অগ্নিগর্ভ নেপাল। মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ১৯ জনের, আহত প্রায় ৩০০ জন। দেশজোড়া বিক্ষোভের মুখে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি পদত্যাগ করেছেন। গণবিদ্রোহের দাবি মেনে নিয়েছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে নেপালে বসবাসকারী প্রবাসী ভারতীয়দের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিল ভারত সরকার। কড়া সতর্কতা জারি হয়েছে ভারত-নেপাল সীমান্তে। মোতায়েন হল কড়া প্রহরা।
মঙ্গলবার সকালে ভারত সরকার সে দেশে অবস্থানরত ভারতীয় নাগরিকদের জন্য একটি বিশেষ বিবৃতি জারি করে। বিদেশমন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নেপালের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং একাধিক প্রাণহানিতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে কেন্দ্র।মন্ত্রকের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, ‘গতকাল থেকে নেপালের ঘটনাবলি আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। যুব সম্প্রদায়ের অনেকের প্রাণ হারানোর ঘটনায় আমরা গভীরভাবে শোকাহত। নিহতদের পরিবারের প্রতি রইল আমাদের সমবেদনা। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, কাঠমান্ডু-সহ নেপালের আরও কয়েকটি শহরে কারফিউ জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। সে কারণে ভারতীয় নাগরিকদের সতর্ক থাকার পাশাপাশি নেপাল সরকারের জারি করা নিয়ম ও নির্দেশিকা মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভারত নেপালকে ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও প্রতিবেশী’ বলে উল্লেখ করে জানিয়েছে, নেপালের সব পক্ষের উচিত সংযম দেখানো এবং আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতির সমাধান করা।
আরও খবর-বীভৎস! শববাহী গাড়ি মেলেনি, মহিলার দেহ বাইকে চাপিয়ে শ্মশানে রওনা পরিবারের
অন্যদিকে, গুরুতর পরিস্থিতি এবং নিরাপত্তাজনিত শঙ্কার কারণে নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এ কারণে যাত্রীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছে। কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মূলত স্থানীয় সময় দুপুরের পর থেকে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় ফ্লাইটের টেক অফ বন্ধ রয়েছে। ত্রিভুবন বিমানবন্দরের মহাব্যবস্থাপক হংসরাজ পাণ্ডে জানান, 'দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিট থেকে কোঠেশ্বর এলাকায় ধোঁয়া দেখা দেওয়ার পর থেকেই আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ রয়েছে। বিমানবন্দর বন্ধ করা হয়নি, আমরা সেটা করবও না।' তবে চলাচলে সমস্যার কারণে ক্রু সদস্যরা বিমানবন্দরে পৌঁছাতে পারছেন না, ফলে কোন ফ্লাইট টেক অফ করতে পারছে না। নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে বুদ্ধ এয়ার-সহ দেশীয় বিমান সংস্থাগুলি সব ফ্লাইট স্থগিত করেছে।
আরও খবর-বীভৎস! শববাহী গাড়ি মেলেনি, মহিলার দেহ বাইকে চাপিয়ে শ্মশানে রওনা পরিবারের
এদিকে, নেপালের চলমান অস্থিরতার কারণে ভারতীয় এয়ারলাইন্সগুলি সব ধরণের কাঠমান্ডু-গামী ও কাঠমান্ডু-থেকে ভারতের ফ্লাইট বাতিল ঘোষণা করেছে।ইন্ডিগো এবং এয়ার ইন্ডিয়া দুই কাঠমান্ডু-এর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বন্ধ থাকার কারণে ভ্রমণ সংক্রান্ত সতর্কতা জারি করেছে। ইন্ডিগো-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, 'বর্তমান পরিস্থিতির কারণে কাঠমান্ডু বিমানবন্দর কার্যক্রমের জন্য বন্ধ রয়েছে। তাই কাঠমান্ডু থেকে এবং কাঠমান্ডু-গামী সকল ফ্লাইট সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে।' বাতিল ফ্লাইটের যাত্রীদের বিকল্প ফ্লাইট বুক করার অথবা ইন্ডিগো-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে টিকিটের টাকা ফেরত নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এয়ারলাইনটি পরিস্থিতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছে এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে শীঘ্রই বিমান চলাচল পুনরায় শুরু করার চেষ্টা করছে। এয়ার ইন্ডিয়াও দিল্লি-কাঠমান্ডু-দিল্লি রুটে চলাচল করা সব ফ্লাইট বাতিল করেছে। এয়ারলাইন্সের মুখপাত্র জানিয়েছেন, 'বর্তমান কাঠমান্ডু-এর পরিস্থিতি বিবেচনা করে, ফ্লাইটগুলি আজ বাতিল করা হয়েছে।' যাত্রী এবং ক্রুদের নিরাপত্তা এয়ার ইন্ডিয়া’র সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।