প্যালেস্টাইন নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের ‘অবিচ্ছিন্ন নীরবতা’র তীব্র সমালোচনা করলেন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী। প্যালেস্টাইন ইস্যুতে ভারতের কড়া প্রতিক্রিয়া এবং নেতৃত্ব প্রদর্শন প্রয়োজন, বলে মনে করছেন তিনি। গাজার মানুষের মৃত্যুমিছিল সত্ত্বেও মোদী সরকারের 'গভীর নীরবতা' ভারতের মানবিকতা এবং নৈতিকতার উপরেই প্রশ্ন এনে দিয়েছে।
দ্য হিন্দুতে কংগ্রেস নেত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে বলেন, 'প্যালেস্টাইন ইস্যুতে ভারতের পদক্ষেপ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বন্ধুত্বের দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে।সেখানে ভারতের সাংবিধানিক মূল্যবোধ বা রাজনৈতিক কৌশলগত সুবিধা-অসুবিধা বিচার করা হচ্ছে না। ' গাজায় মৃত্যুমিছিল নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাবকেও 'বেদনাদায়ক এবং মানবতার উপর চরম আঘাত' বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। বিশ্ব মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক কখনই ভারতের মনোভাবকে ব্যক্ত করতে পারে না বলে উল্লেখ করেন সনিয়া গান্ধী। বিশেষ করে, যেখানে প্যালেস্টাইনকে ১৯৮৮ সালেই সর্বাগ্রে স্বীকৃতি দিয়েছিল, সেক্ষেত্রে মোদী সরকারের আমলে রাষ্ট্রসংঘে ভোটাভুটির সময় দ্বিরাষ্ট্র নীতির বৈঠকে ভারতের বিরত থাকা খুবই দুঃখজনক বলে মনে করছেন কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেত্রী। তাঁর কথায়, মানবতা ও নৈতিকতা বোধ, দু’টোর কোনওটাই যে নেই, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন-বিয়ের সময়ই হিন্দু মেয়েদের ‘গোত্র’ বদল! সম্পত্তি মামলায় বিশেষ পর্যবেক্ষণ SC-র
গাজায় ইজরায়েল হামলায় ইতিমধ্যেই প্রায় ৬৪ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে শিশু এবং মহিলাদের সংখ্যা প্রায় ৭০ শতাংশ। সেইসঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তরফে পাঠানো ত্রাণও আটকে দিচ্ছে নেতানিয়াহু সরকার। এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে সনিয়া গান্ধী বলেন, 'গাজাবাসীকে দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতিতে পড়তে বাধ্য করা হয়েছে, ইজরায়েলি সেনাবাহিনী অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য, ওষুধ এবং অন্যান্য সাহায্য সরবরাহে নিষ্ঠুরভাবে বাধা দিচ্ছে। সমগ্র বিশ্ব প্যালেস্তাইন ইস্যুতে পদক্ষেপ নিতে অনেক দেরি করে ফেলেছে। আর এই নিষ্ক্রিয়তা ইজরায়েলের বাড়াবাড়িকেই বৈধতা দিয়েছে।' অন্যদিকে, ফ্রান্স, ব্রিটেন, কানাডা, পর্তুগাল এবং অস্ট্রেলিয়া-সহ বেশ কয়েকটি দেশ সম্প্রতি প্যালেস্টাইনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে। এই পদক্ষেপকে সনিয়া গান্ধী 'মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের দীর্ঘস্থায়ী দাবি' বলে অভিহিত করেছেন। এটিকে শুধুমাত্র একটি বিদেশ নীতি নয়, বরং মানবতার খাতিরে ভারতের আরও কঠোরভাবে এর নিন্দা করা উচিত বলে মনে করছেন কংগ্রেস নেত্রী।
আরও পড়ুন-বিয়ের সময়ই হিন্দু মেয়েদের ‘গোত্র’ বদল! সম্পত্তি মামলায় বিশেষ পর্যবেক্ষণ SC-র
উল্লেখ্য, গাজার যুদ্ধবিরতি নিয়ে গত তিন বছরে চারবার ভোটদান থকে বিরত থাকে ভারত। এই নিয়েই প্যালেস্টাইনের প্রতি ভারতের অবস্থান নিয়ে বিরোধী শিবিরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। অবশেষে সম্প্রতি বিশ্বের বিশ্বের ১৪২ টি দেশের সঙ্গে প্যালেস্টাইন ও ইজরায়েল দ্বিরাষ্ট্র নীতির পক্ষে ভোট দিয়েছে ভারত।