কেন্দ্র ত্রিকোণ রাজযোগ হল বৈদিক জ্যোতিষশাস্ত্রের একটি অত্যন্ত শুভ যোগ, যা কুণ্ডলীতে গ্রহের বিশেষ অবস্থানের কারণে সৃষ্টি হয়। এই যোগটিকে অন্যতম শক্তিশালী রাজযোগ বা শুভ ফলদায়ী যোগ হিসেবে গণ্য করা হয়, যা ব্যক্তিকে রাজকীয় সুখ, ক্ষমতা, সম্পদ এবং সম্মান প্রদান করতে পারে।
কেন্দ্র ত্রিকোণ রাজযোগ কী?
জ্যোতিষশাস্ত্রে, জন্মছকের ঘরগুলিকে দু'টি প্রধান শুভ শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। ১, কেন্দ্র স্থান ও ২, ত্রিকোণ স্থান।
১. কেন্দ্র স্থান: জন্মছকের ১, ৪, ৭ এবং ১০ নম্বর ঘরকে কেন্দ্র স্থান বলা হয়। এই ঘরগুলি মূলত কর্ম, জীবন, সম্পর্ক এবং স্বাস্থ্যের প্রতীক। এই ঘরগুলির অধিপতি গ্রহগুলি শুভ বা অশুভ উভয়ই হতে পারে।
২. ত্রিকোণ স্থান: জন্মছকের ৫ এবং ৯ নম্বর ঘরকে ত্রিকোণ স্থান বলা হয়। এই ঘরগুলিকে সবচেয়ে শুভ হিসেবে দেখা হয়। এই ঘরগুলি সাধারণত ভাগ্য, জ্ঞান, পূর্বজন্মের পুণ্য, এবং ধর্মের প্রতীক। এই ঘরগুলির অধিপতি গ্রহগুলি সব সময় শুভ ফলদাতা হয়।
যখন কেন্দ্র স্থানের অধিপতি গ্রহ এবং ত্রিকোণ স্থানের অধিপতি গ্রহ জন্মছকের একই ঘরে বা পরস্পরের সাথে দৃষ্টি বিনিময়ের মাধ্যমে শুভ সংযোগ তৈরি করে, তখন সেই শুভ সমন্বয়কে কেন্দ্র ত্রিকোণ রাজযোগ বলা হয়।
কোন কোন রাশির উপকার?
১. মেষ রাশি: মেষ রাশির জন্য এই যোগ তৈরি হয় যখন লগ্নপতি মঙ্গল এবং ভাগ্যপতি বৃহস্পতি বা ধর্মপতি সূর্য শুভ ঘরে মিলিত হয়। এঁরা ভাগ্য এবং ক্ষমতা দিয়ে জীবনে সফল হন।
২. সিংহ রাশি: সিংহ রাশির অধিপতি সূর্য এবং কর্মের অধিপতি শুক্র বা ভাগ্যপতি মঙ্গল-এর শুভ সংযোগ এদের জন্য অত্যন্ত শুভ। এঁরা পেশাগত জীবনে উচ্চপদ এবং খ্যাতি লাভ করেন।
৩. ধনু রাশি: ধনু রাশির অধিপতি বৃহস্পতি এবং ভাগ্যপতি সূর্য-এর সংযোগ এদের জীবনে জ্ঞান, আধ্যাত্মিকতা এবং আর্থিক সমৃদ্ধি এনে দেয়। এঁরা শিক্ষকদের কাছ থেকে বা গুরুজনের কাছ থেকে বিশেষ সাহায্য পান।
আরও পড়ুন - অসুরের অত্যাচার থেকে জগৎ রক্ষার্থে কুমারী রূপে অবতীর্ণ হন মা, জানেন এই কাহিনি?
আরও পড়ুন - ষষ্ঠীতে মায়ের বোধনের আগে বিসর্জন দিন ৬ জিনিস, টাকার বৃষ্টি নামবে তারপরেই
৪. মকর রাশি: মকর রাশির জন্য এই যোগটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর অধিপতি শনি এবং ত্রিকোণপতি বুধ-এর সংযোগ কর্মজীবনে অভূতপূর্ব সাফল্য এবং স্থায়িত্ব দেয়। এঁরা দীর্ঘ ও কঠোর পরিশ্রমের ফল ভোগ করেন।
৫. বৃষ রাশি: বৃষ রাশির জন্য কেন্দ্রপতি শনি এবং ত্রিকোণপতি বুধ-এর সংযোগ খুব শক্তিশালী হয়। এই যোগ এঁদের আর্থিক স্থায়িত্ব, জমি-জমা সংক্রান্ত লাভ এবং মানসিক তৃপ্তি প্রদান করে।
পাঠকদের প্রতি: প্রতিবেদনটি জ্যোতিষশাস্ত্রের গণনার ভিত্তিতে লেখা হয়েছে। এখানে লেখা সব কথা আগামী দিনে সত্য প্রমাণিত হবে, এমন দাবি করা হচ্ছে না। জ্যোতিষশাস্ত্র সংক্রান্ত কোনও প্রশ্ন বা কোনও সমস্যার সমাধানের জন্য পেশাদার জ্যোতিষীর সঙ্গে আলোচনা করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।