নিজের প্রথম ওয়েব সিরিজের সুবাদে ইতিমধ্য়েই চর্চায় উঠে এসেছেন শাহরুখ পুত্র আরিয়ান খান। ব্য়াডস অফ বলিউডে সিনে ইন্ডাস্ট্রির কঙ্কালসার রূপ তুলে ধরেছেন আরিয়ান। বাদ যায়নি তাঁর জীবনের অভিশপ্ত অধ্যায়ও। মাদককাণ্ডে বছর চারেক আগে জেলে গিয়েছিলেন শাহরুখ-গৌরীর ছেলে। প্রাক্তন এনসিবি অফিসার সমীর ওয়াংখেড়েকে নেটফ্লিক্সের সিরিজে বিঁধতে ছাড়েননি আরিয়ান, মত নিন্দকদের।
এবার আইআরএস অফিসার নেটফ্লিক্স সিরিজ ব্যাডস অফ বলিউডের বিরুদ্ধে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা সহ ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। আরিয়ান খান পরিচালিত সাত পর্বের এই সিরিজ গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে নেটফ্লিক্সে দেখা যাচ্ছে। রিপোর্ট অনুসারে, সমীর তাঁর আবেদনের প্রতিলিপিতে অভিযোগ করেছেন এই শো মাদক বিরোধী সংস্থাগুলিকে নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে এবং কেন্দ্রীয় এজেন্সির নেতিবাচক চিত্র তুলে ধরেছে, যার ফলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির প্রতি জনগণের আস্থা হ্রাস পাবে। তিনি আরও দাবি করেছেন যে এই সিরিজে ‘ইচ্ছাকৃত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে’ তাঁর খ্যাতি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা চালানো হয়েছে।
‘জেলে থাকলে জনপ্রিয়তা বাড়ে…’ ‘ব্যাডস অফ বলিউড’-এর পয়লা ঝলকেই মাদককাণ্ডে গ্রেফতারি নিয়ে শ্লেষাত্মক সংলাপ ছুড়ে দিয়েছিলেন আরিয়ান। আর সিরিজ মুক্তি পেতেই ঝুলি থেকে বেরিয়ে এসেছে বিড়াল। দর্শকরা প্রথম পর্বে এমন এক অ্যান্টি-ড্রাগস এজেন্সির অফিসারের খোঁজ পেয়েছেন যাঁর সঙ্গে সমীর ওয়াংখেড়ের চেহারা ও হাবভাবের বেশ মিল রয়েছে।
সমীর ওয়াংখেড়ে প্রাক্তন নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর(এনসিবি) কর্মকর্তা যিনি ২০২১ সালের হাই-প্রোফাইল আরিয়ান খান ড্রাগস কেসে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
আরিয়ানের সিরিজের প্রথম পর্বের এক চরিত্র নিজেকে 'মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধের' অংশ হিসাবে পরিচয় দেয় এবং 'এনসিজি'র সাথে যুক্ত এমনটা জানায়, ইন্ডাস্ট্রির কথিত মাদক সংস্কৃতির নিন্দা করে এক বলিউড পার্টিতে প্রবেশ করে। চরিত্রটির পোশাক, চুলের ছাঁট এবং শারীরিক চেহারা সমীর ওয়াংখেড়ের কথা মনে করাবে দর্শককে। যদিও আরিয়ান কিন্তু আগেই বলেছেন, তার সিরিজের সব চরিত্র কাল্পনিক!
নির্মাতারা আনুষ্ঠানিকভাবে চরিত্রটি এবং প্রাক্তন এনসিবি অফিসারের মধ্যে কোনও সংযোগ নিশ্চিত করেননি, তবে নেটিজেনদের স্থির বিশ্বাস এই সাদৃশ্য় একেবারেই ইচ্ছাকৃত। শাহরুখ খান ও গৌরী খানের মালিকানাধীন রেড চিলিজ এন্টারটেইনমেন্টের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেছেন ওয়াংখেড়ে। আবেদনে এই সিরিজের বিরুদ্ধে স্থায়ী এবং বাধ্যতামূলক নিষেধাজ্ঞা, সিরিজে ‘মিথ্যা, বিদ্বেষপূর্ণ এবং মানহানিকর’ উপস্থাপনার জন্য ক্ষতিপূরণের জন্য অনুরোধ করেছেন সমীর ওয়াংখেড়ে। জানা যাচ্ছে, ২ কোটি টাকা দাবি করেছেন তিনি।
ওদিকে সিরিজের আরেক দৃশ্য়ে রণবীর কাপুরের হাতে ই-সিগারেট দেখা যাওয়ায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (এনএইচআরসি) মুম্বই পুলিশকে রণবীর কাপুর, প্রযোজনা সংস্থা রেড চিলিস এন্টারটেনমেন্ট এবং নেটফ্লিক্সের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার সুপারিশ করেছে। যথাযথ ডিসক্লেইমার ছাড়াই পর্দায় নিষিদ্ধ ই-সিগারেটের ব্যবহার চিত্রিত করার বিষয়ে লিগ্যাল রাইটস অবজারভেটরি থেকে একটি অভিযোগের পরে এই পদক্ষেপটি নেওয়া হয়েছে। এনএইচআরসি সদস্য প্রিয়াঙ্ক কানুঙ্গো মুম্বাই পুলিশ কমিশনারকে চিঠি লিখে বৈদ্যুতিক সিগারেট নিষিদ্ধকরণ আইন, ২০১৯ এর অধীনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।