ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে নতুন করে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে আলাস্কায় মুখোমুখি বসেছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৈঠককে ঘিরে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে যেমন কৌতূহল ছিল তুঙ্গে। কিন্তু রাজনৈতিক আলোচনার পাশাপাশি আরও একটি বিষয় নিয়ে জোর চর্চা চলছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিষয়টি হল পুতিনের 'অদ্ভুত' নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
একটি মিডিয়া রিপোর্ট বলছে, পুতিনের জন্য তাঁর দেহরক্ষীরা 'মলবাহী স্যুটকেস' নিয়ে এসেছিল রাশিয়া থেকে আলাস্কায়। দুই ফরাসি সাংবাদিক রেজিস জঁতে ও মিখাইল রুবিনের দাবি, পুতিন যখনই বিদেশ সফরে যান, তাঁর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সংস্থা ফেডারেল প্রোটেকশন সার্ভিস-এর সদস্যরা তাঁর সমস্ত দেহবর্জ্য সংগ্রহ করেন। মল থেকে প্রস্রাব, সবই বিশেষ ব্যাগে সিল করা হয়। পরে সেগুলো একটি বিশেষ ব্রিফকেসে ভরে রাশিয়ায় ফেরত পাঠানো হয়। কারণ, বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলি যাতে তাঁর শারীরিক অবস্থার কোনও নমুনা হাতে না পায়।শুধু তাই নয়, একাধিক সফরে পুতিনের জন্য বিশেষভাবে তৈরি পোর্টেবল টয়লেটও বহন করা হয় বলে দাবি দুই সাংবাদিকের। রুশ প্রেসিডেন্টকে যাতে অন্য কোনও শৌচাগার ব্যবহার না করতে হয় এবং সমস্ত বর্জ্য নিশ্চিতভাবে সুরক্ষিত রাখা যায় তার জন্যই নাকি এমন ব্যবস্থা। সাংবাদিকদের দাবি, শুধু আলাস্কা নয়, ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া-সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সফরের সময়ও একই সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছিল। কয়েক দশক ধরেই নাকি রুশ প্রেসিডেন্টের সফরে এই ব্যবস্থা চালু আছে। ফলে আলাস্কার বৈঠকে যে এই ব্যবস্থা অবলম্বন করা হয়েছে তা নিয়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
এই ব্যবস্থা কার্যকর হয়েছে সেই ২০১৭ সাল থেকে। সেই সময় মে মাসে পুতিন ফ্রান্সে গিয়েছিলেন। সেই সময়ও দুই সাংবাদিক জানিয়েছেন, রুশ প্রেসিডেন্টের স্বাস্থ্য সম্পর্কে যাতে বিদেশি রাষ্ট্রগুলি কোনও তথ্য সংগ্রহ করতে না পারে তার জন্য সেই সময়ও মলবাহী সুটকেশ ব্যবহার করেছিল রাশিয়া। সাংবাদিক ফরিদা রুস্তামোভাও জানিয়েছেন যে পুতিনের ভিয়েনা সফরের সময়ও এই ধরনের ব্যবস্থা ছিল, যেখানে তিনি একটি পোর্টেবল টয়লেট ব্যবহার করেছিলেন। তিনি বলেছেন, একজন সূত্র জানিয়েছে যে প্রেসিডেন্ট ১৯৯৯ সালে তার নেতৃত্ব শুরু করার পর থেকে এই অভ্যাস চালিয়ে আসছেন।
উল্লেখ্য, ৭২ বছর বয়সি পুতিনের স্বাস্থ্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই গুঞ্জন রয়েছে। প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে তাঁর হাতের কাঁপুনি ধরা পড়েছে ক্যামেরায়, দেখা গেছে পায়ের পেশি টান ধরাও। মাঝেমধ্যেই শোনা গিয়েছে পুতিনের পড়ে যাওয়া, হৃৎপিণ্ডের সমস্যা বা স্নায়বিক অসুবিধার মতো খবরও। যদিও রুশ সরকারের পক্ষ থেকে এই ধরনের খবরে কখনওই স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। তবু সাম্প্রতিক সময়ে পুতিনের শারীরিক অবস্থা নিয়ে বিভিন্ন মহলে জল্পনা ছড়ানোয় বর্জ্য সংগ্রহের বিষয়টি আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।