মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির চাপে এখন বিশ্বের নানা দেশ। সেই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশ এখন নিজেদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক শুধরোনোর কাজে লেগে পড়েছে। সেই অবস্থাতেই ভারত ও চিন যারা সাধারণত যুযুধান দুই পক্ষ হিসেবেই ইদানিং সময়ে শিরোনামে এসেছে, এবার তারা পরস্পরের সঙ্গে আলোচনার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে।গালওয়ান উত্তেজনা পর প্রথম চিন সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার আগেই সোমবার দুই দিনের সফরে ভারতে আসছেন চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই।
যখন ট্রাম্প শুল্কবাণে বিদ্ধ করে ভারতকে জর্জরিত করতে চাইছেন, ঠিক তখনই নয়া দিল্লির পাশে দাঁড়িয়েছে চিন। বেজিংয়ের সঙ্গে ভারতের এই সখ্যতা আগামীদিনে কতটা সুদূরপ্রসারী হবে সেটি ভবিষ্যত বলবে। তবে আপাতত চীনের সঙ্গে ভারতের এই সখ্যতায় ট্রাম্পের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।এই আবহে সীমান্তে বিরোধ নিয়ে আলোচনা করতে সোমবার ভারতের আসছেন চিনা বিদশমন্ত্রী ওয়াং ই। বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতি অনুসারে, শীর্ষ চিনা মন্ত্রী জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে ভারত-চিন সীমান্ত প্রশ্নে বিশেষ প্রতিনিধিদের ২৪তম দফার আলোচনা করবেন। পাশাপাশি ওয়াং ই এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন-'কিছু জিনিস অপরিবর্তনশীল!' বৈঠকের আগেই জেলেনস্কিকে 'ডবল বোমা' ট্রাম্পের
ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই ১৮ এবং ১৯ আগস্ট ভারত সফর করবেন। এই সময়ে সীমান্ত বিরোধ এবং অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার সন্ধ্যায় বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর এবং ওয়াং ইয়ের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মঙ্গলবার সকালে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং ওয়াং ইয়ের মধ্যে একটি বৈঠকের কথা রয়েছে, যেখানে ভারত-চিন সীমান্ত সম্পর্কিত বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করা হবে।এছাড়াও বাণিজ্য এবং বিমান পরিষেবা পুনরায় চালু করার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এর পাশাপাশি, কূটনৈতিক মহলে এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে, কারণ দীর্ঘদিনের সীমান্ত উত্তেজনার মধ্যে এই উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা দুই দেশের সম্পর্কে নতুন সমীকরণ আনতে পারে।তারপর বিকেলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন চিনা বিদেশমন্ত্রী।এটি হবে চিনের প্রথম উচ্চ পর্যায়ের সফর, যাকে বেইজিং তার সর্বকালের বন্ধু বলে অভিহিত করে।
আরও পড়ুন-'কিছু জিনিস অপরিবর্তনশীল!' বৈঠকের আগেই জেলেনস্কিকে 'ডবল বোমা' ট্রাম্পের
চলতি মাসের শেষে আন্তর্জাতিক জোট ‘সাংহাই কো অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও ) বৈঠক বসবে চিনে। সেই বৈঠকে যোগ দিতে চিন সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। ২০১৯ সালে শেষ চিন সফরে গিয়েছিলেন মোদী। ২০২০ সালে লাদাখে ভারত-চিন সংঘর্ষের পরে এই প্রথম বেজিংয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। চিনের তিয়ানজিন শহরে আগামী ৩১ অগাস্ট এবং ১ সেপ্টেম্বর এসসিও-র রাষ্ট্রনেতাদের বৈঠক রয়েছে।গত বছর চিনে সফর করেন অজিত ডোভাল। সেখানে তিনি চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই’ র সঙ্গে বৈঠক করেন। তারপরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-র সঙ্গে রাশিয়ার কাজান শহরে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। ২০২০ সালে পূর্ব লাদাখে সীমান্ত বিরোধ নিয়ে গালওয়ান সংঘর্ষের পর সম্পর্কের অবনতি হওয়ার পর এটিই ছিল প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং শি জিনপিংয়ের মধ্যে প্রথম মুখোমুখি বৈঠক।