প্রতাপ সারাঙ্গি এবং মুকেশ রাজপুতের মাথায় চোট লেগেছে। এমনই দাবি করলেন দিল্লির রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার অজয় শুক্লা। যে দু'জনকে বৃহস্পতিবার জটলার সময় কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী ধাক্কা দিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তারপর তাঁদের দিল্লির হাসপাতালে ভরতি করা হয়। তাঁদের শারীরিক অবস্থা নিয়ে রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার জানিয়েছেন, দু'জনেরই মাথায় সাংসদ লেগেছে। রক্তচাপ সংক্রান্ত সমস্যা আছে। তাঁদের ওষুধ দেওয়া হয়েছে। সারাঙ্গির বয়স বেশি। ফলে ধাক্কাধাক্কির সময় আচমকা তাঁর রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। এমনকী স্ট্রোক বা হার্ট-অ্যাটাক হতে পারে বলেও
দু'বারের সাংসদ প্রতাপ সারাঙ্গি আদতে কে?
১) ১৯৫৫ সালের ৪ জানুয়ারি বালাসোর জেলার গোপীনাথপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালে উৎকল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনপ্রাপ্ত ফকির মোহন কলেজ থেকে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ করেছিলেন।
২) রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) স্বেচ্ছাসেবক ছিলেন সারাঙ্গি। পরবর্তীতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বজরং দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। যিনি ২০১৪ সালে বালাসোর লোকসভা কেন্দ্র থেকে লড়াই করেছিলেন। তবে হেরে গিয়েছিলেন।
৩) প্রতাপ দু'বারের সাংসদ। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বালাসোর লোকসভা কেন্দ্র থেকে ১২,০০০-র বেশি ভোটে জিতেছিলেন। আর ২০২৪ সালে সেই মার্জিনটা একধাক্কায় বেড়ে এক লাখের গণ্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছে।
৪) ১৯৯৯ সালে অস্ট্রেলিয়ান খ্রিস্টান মিশনারি গ্রাহাম স্টেনস এবং তাঁর দুই সন্তানকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছিল বজরং দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে। সেইসময় বজরং দলের রাজ্য সভাপতি ছিলেন সারাঙ্গি। সাক্ষ্য হিসেবে তিনি দাবি করেছিলেন যে মূল অভিযুক্ত দারা সিং বজরং দলের সদস্য ছিলেন না। যে প্রতাপ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সদস্যও ছিলেন।
৫) সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, হিংসা-সহ একাধিক ধারায় ২০০২ সালে প্রতাপকে গ্রেফতার করেছিল ওড়িশা পুলিশ। সেইসময় বজরং দল-সহ একাধিক ডানপন্থী গোষ্ঠী হামলা চালিয়েছিল ওড়িশা বিধানসভায়। সেই ঘটনায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
৬) সাংসদ হওয়ার আগে দু'বার বিধায়কও হয়েছিলেন। ২০০৪ সালে বালাসোর লোকসভা কেন্দ্রের নীলাগিরি বিধানসভা আসন থেকে বিজেপির টিকিটে জিতেছিলেন। ২০০৯ সালে ওই আসন থেকেই নির্দল প্রার্থী হিসেবে জিতেছিলেন সারাঙ্গি।
‘জায়ান্টকিলার’ মুকেশ রাজপুত আদতে কে?
১) উত্তরপ্রদেশের ফারুখাবাদের তিনবারের সাংসদ হলেন মুকেশ। তাঁকে তুলে এনেছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিং।
২) লোকসভা ভোটে মুকেশ ‘জায়ান্টকিলার’ হিসেবে পরিচিত। ২০১৪ সালে হেভিওয়েট সাংসদ সলমন খুরশিদকে হারিয়ে দিয়েছিলেন। ২০১৯ সালে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী খুরশিদ এবং বিএসপি প্রার্থী মনোজ আগরওয়ালকে হারিয়ে দিয়েছিলেন। তবে ২০২৪ সালের জয়ের মার্জিন মাত্র ২,০০০-র উপরে ছিল।
৩) নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় মুকেশ জানিয়েছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি মামলা নেই। অস্থাবর সম্পদের মূল্য হল ১.৬ কোটি টাকা। আর স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৭.৮ কোটি টাকা বলে জালিয়েছিলেন তিনি।