রাজ্যে দমকল বিভাগে দীর্ঘদিন ধরে চলা কর্মীসংকট কাটাতে এবার বড়সড় পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিলেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। যা চাকরিপ্রার্থীদের জন্য খুলে দিতে চলেছে বড় সুযোগের দরজা। সোমবার বীরভূমের রামপুরহাটে তিনি জানালেন, আদালতে ওবিসি সংরক্ষণ সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তি হলেই একসঙ্গে হাজারেরও বেশি কর্মী নিয়োগ করা হবে।
আরও পড়ুন: শহরের ১৩টি পুর বাজারে ফায়ার অডিট শেষ, রিপোর্ট পেলেই পদক্ষেপ করবে KMC
মন্ত্রী জানান, মোট ১,৩০০ জন কর্মী নিয়োগ করা হবে। এর মধ্যে ১,০০০ জন ফায়ার অপারেটর এবং ৩০০ জন চালক পদে নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। মন্ত্রী আরও জানান, নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে ইতিমধ্যেই মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে মামলা নিষ্পত্তির আগে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা সম্ভব নয়। গত জানুয়ারিতেই পিএসসির মাধ্যমে দমকল বিভাগে নতুন কর্মী নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন মন্ত্রী, কিন্তু মামলার জটিলতার কারণে সেই প্রক্রিয়া আটকে ছিল। এদিন ফের স্পষ্ট করে দিলেন, আদালতের নির্দেশ এলেই নিয়োগ শুরু হবে।
শুধু কর্মীসংকট মেটানো নয়, পরিকাঠামো বাড়ানোর দিকেও নজর দিচ্ছে রাজ্য। বর্তমানে বীরভূম জেলায় পাঁচটি দমকল কেন্দ্র চালু আছে। শীঘ্রই তারাপীঠ, নলহাটি, মুরারই এবং লাভপুরে আরও চারটি কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। মন্ত্রী জানিয়েছেন, এর মধ্যে কয়েকটির জন্য ইতিমধ্যেই পরিকল্পনা ও ব্যয়ের হিসেব পাঠানো হয়েছে। মুরারইয়ের জন্য জমির ছাড়পত্র মিললেই কাজ শুরু হবে। তবে নতুন কেন্দ্র গড়ে উঠলেও অনেক পুরনো দমকল কেন্দ্রেই কর্মীর ঘাটতি প্রকট। সেই ঘাটতি মেটাতেই নিয়োগকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে বলে জানান সুজিত বসু।
এদিকে, সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যের একাধিক বহুতল অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা এবং প্রাণহানিতে উদ্বেগ বাড়ছে। অভিযোগ উঠেছে, রামপুরহাট শহরে দমকলের অনুমোদন ছাড়াই বহুতল ভবন তৈরি হচ্ছে, অথচ প্রশাসনের তরফে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী জানান, বহুতল অনুমোদনের দায়িত্ব মূলত পুরসভা ও পঞ্চায়েতের, নির্দিষ্ট উচ্চতা পর্যন্ত দমকলের অনুমোদন নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। তবে অগ্নিকাণ্ড রোধে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম বাড়ানোর দিকেও রাজ্য গুরুত্ব দিচ্ছে।রামপুরহাট ও তারাপীঠে বহুতল হোটেল ও আবাসনের সংখ্যা বাড়ছে দ্রুত। সেক্ষেত্রে বড় শহরের মতো ফায়ার ল্যাডার পরিষেবার দাবি তুলেছেন স্থানীয় বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি মন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন এবং মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হবে।