আদালতের ভিতর থেকে চুরি হয়ে যাচ্ছে আইনজীবীদের চেয়ার-টেবিল থেকে শুরু করে সাইকেল। সোমবার এক আইনজীবীর চেয়ার টেবিল চুরি হয়ে যাওয়া ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কল্যাণী আদালত চত্বরে। একেবারে আদালতের ভিতরে একের পর এক এমন ঘটনার পরও নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেন সুনিশ্চিত করা যাচ্ছে না তাই নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
আরও পড়ুন: খেজুরিতে ২ বিজেপি কর্মীর রহস্যমৃত্যু, তদন্তকারীর ভূমিকায় প্রশ্ন তুলল হাইকোর্ট
এই চুরির বিষয়ে আদালতের বিচারকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন আইনজীবী কমলিকা দাস। তিনি জানান, জেলা বিচারকের নির্দেশের প্রেক্ষিতে গত রবিবার সন্ধ্যায় তিনি একটি মার্বেলের টেবিল এবং তিনটি চেয়ার নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে যান। এরপর সোমবার সকালে কোর্টে এসে তিনি দেখেন তার চেয়ার টেবিল উধাও। কমলিকা বলেন, এর আগে ২০১৩ সালে এরকম ঘটনা আরও দুই মহিলা আইনজীবীর সঙ্গে করা হয়েছিল। তাঁদের প্র্যাকটিস বন্ধ করে দেওয়া হয়। বছর তিনেক আগে আদলাত চত্বর থেকে একটি পোষা শুকর চুরি করে নেওয়া হয়। তারও কোনও সুরাহা হয়নি। কল্যাণী আদলাত এখন সরাইখানায় পরিণত হয়েছে। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারপ্রাপ্ত বিচারক মহিলা আইনজীবীকে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন।
সূত্রের খবর, ২০১৩ সালে দুই মহিলা আইনজীবীকে বার অ্যাসোসিয়েশনের ভিতরে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে ওঠে। মামলা গড়ায় হাইকোর্ট পর্যন্ত। তৎকালীন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে আইনজীবীদের পোষা শুকর ঘনার চুরি যাওয়ার ঘটনা আদালতের সিসিটিভিতে ধরা পড়লেও কোনও কিনারা হয়নি। সেই মামলাও গড়ায় হাইকোর্টে।
এরপর একাধিক অপ্রীতিকর ঘটনার অভিযোগ উঠেছে কল্যাণী আদালতে। অভিযোগ দায়ের হয়েছে বার অ্যাসোসিয়েশনের কয়েকজন কর্তার পাশাপশি জেলা বিচারকের বিরুদ্ধেও। সম্পূর্ণ বিষয় জানিয়ে অভিযোগ দায়ের হয়েছে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে। সুবিচার মেলেনি বলে আক্ষেপ করছেন ভুক্তভোগী আইনজীবীরা। তাঁদের প্রশ্ন, আদালতের সিসিটিভির মনিটরিং সিস্টেম কীভাবে বার অ্যাসোসিয়েশনের ঘরে থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়।
এ প্রসঙ্গে কল্যাণী ক্রিমিনাল কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মুকুল বিশ্বাস বলেন, ‘হাতে গোনা দু চারজন আইনজীবীর মস্তানিতে আদালতে কাজের পরিবেশ দীর্ঘ সময় ধরে খারাপ হয়ে আছে। জেলা বিচারকের পক্ষপাত দুষ্ট। হাইকোর্ট প্রশাসন থেকে বার কাউন্সিল জানানো হয়েছে সর্বত্র। কিন্তু সবাই ঘুমিয়ে আছে। সুবিচার না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলবে।’