বিদ্রোহের আগুনে আবার অস্থির নেপাল। রাজধানী কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২০ জনের। সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভে রাস্তায় নেমেছে সাধারণ মানুষ। সামাজিক মাধ্যমে কড়াকড়ি এবং বিরোধীদের দমননীতি পরিস্থিতিকে আরও বিস্ফোরক করেছে। এরই মাঝে ভারতের সীমান্তে নজরদারি জোরদার করেছে সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী (এসএসবি)। ফলে পর্যটনের মরশুম শুরু হওয়ার মুখেই উদ্বেগে পড়েছেন উত্তরবঙ্গের পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন: রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ! ইরান থেকে ২ প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের উদ্ধারে ভারত
পানি ট্যাঙ্কি সীমান্তে সোমবার দুপুর থেকেই কড়াকড়ি বাড়ানো হয়েছে। পরিচয়পত্র পরীক্ষা ছাড়া সীমান্ত পারাপার কঠিন। ওপারে নেপালের সশস্ত্র বাহিনীও নজরদারি বাড়িয়েছে। ফলে সীমান্তে দীর্ঘ লাইনে আটকে থাকতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এপাশে এসএসবি, ওপাশে নেপালি সেনার বাড়তি কড়াকড়ি যাতায়াতকে প্রায় স্থবির করে তুলেছে। শিলিগুড়ি এবং উত্তরবঙ্গের পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, গত দু’বছর ধরে নেপাল ভ্রমণে ভারতীয়, বিশেষ করে বাঙালি পর্যটকদের আগ্রহ অনেক বেড়েছিল। এবছরও পুজোর মরশুম ঘিরে প্রচুর ফোন এসেছিল। কিন্তু সোমবারের পর থেকে চিত্র একেবারেই পাল্টে গেছে। বুকিং কমছে, ফোন আসা কার্যত বন্ধ। ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, নিরাপত্তার অনিশ্চয়তার কারণে পুজোর মরশুমে পর্যটকরা নেপাল যাত্রা বাতিল করবেন।
পর্যটন সংগঠনের বক্তব্য, গত বছর রেকর্ড সংখ্যক বাঙালি পর্যটক নেপালে গিয়েছিলেন। এবছরও সাড়া ভালো ছিল। কিন্তু হঠাৎ যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে পর্যটন প্রায় ভেস্তে যাবে। পর্যটন ও পর্বতারোহণ নেপালের অন্যতম বড় আয় উৎস। বিশ্বের দশটি সর্বোচ্চ পর্বতের মধ্যে আটটি নেপালে অবস্থিত। শুধু পর্বতারোহণ থেকেই গত বছর দেশটির আয় হয়েছিল প্রায় ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তাই বিদ্রোহ ও রাজনৈতিক অস্থিরতা নেপালের অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা আনতে পারে।
রাজ্যের তরফেও পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। রাজ্য ইকো-ট্যুরিজম কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, নেপালের পরিস্থিতি অস্থির থাকলে পর্যটনে বড় প্রভাব পড়বে, ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। উল্লেখ্য, রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে এর আগেও উত্তাল হয়েছিল নেপাল। এবার ফের সরকারের দমননীতির জেরে রক্তক্ষয়ী আন্দোলন পরিস্থিতিকে আরও অনিশ্চিত করেছে। সীমান্ত পেরিয়ে তার আঁচ পড়তে শুরু করেছে উত্তরবঙ্গের পর্যটন শিল্পেও।