আয়কর নিয়ে অনেক প্রত্যাশা ছিল। আর কেন্দ্রীয় বাজেটে একেবারে ‘ব্লকবাস্টার’ ধামাকা হল। শনিবার সংসদে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ঘোষণা করলেন, ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ের ক্ষেত্রে কোনও আয়কর দিতে হবে না। আগে সেই সীমাটা ছিল সাত লাখ টাকা। এখন সেটা একধাক্কায় পাঁচ লাখ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হল। যাঁরা বেতনভোগী, তাঁরা স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের কারণে আরও ৭৫,০০০ টাকার বাড়তি সুযোগ পাবেন। অর্থাৎ তাঁদের ক্ষেত্রে আয়কর না দেওয়ার সীমা হল ১২.৭৫ লাখ টাকা।
নতুন আয়কর কাঠামোয় কী কী আছে?
তারইমধ্যে আবার নয়া আয়কর কাঠামোর ঘোষণা করা হয়েছে। নয়া আয়কর কাঠামো অনুযায়ী, চার লাখ টাকা পর্যন্ত আয়কর শূন্য। চার লাখ টাকা থেকে লাখ লাখ টাকার মধ্যে আয়করের হার পাঁচ শতাংশ। আট লাখ টাকা থেকে ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়কর দিতে হবে ১০ শতাংশ হারে। ১২ লাখ টাকা থেকে ১৬ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়করের হার হল ১৫ শতাংশ। ১৬ লাখ টাকা থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ২০ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হবে। ২০ লাখ টাকা থেকে ২৪ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়করের হার হল ২৫ শতাংশ। ২৪ লাখ টাকার বেশি হলে ৩০ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হবে।
নতুন আয়কর কাঠামোর জন্য কার কত টাকা বাঁচবে?
১) ১২ লাখ টাকা: ৮০,০০০ টাকা।
২) ১৬ লাখ টাকা: ৫০,০০০ টাকা।
৩) ১৮ লাখ টাকা: ৭০,০০০ টাকা।
৪) ২০ লাখ টাকা: ৯০,০০০ টাকা।
৫) ২৫ লাখ টাকা: ১,১০,০০০ টাকা।
কেন্দ্রীয় বাজেট ও আকর্ষণীয় তথ্য
বাজেট ফাঁস: ১৯৫০ সালে ছাপার সময় বাজেট ফাঁস হয়ে গিয়েছিল। তারপর ছাপার প্রক্রিয়া রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে মিন্টো রোডে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। নর্থ ব্লকের বেসমেন্টে বাজেট ছাপার করার কাজ শুরু হয়েছিল ১৯৮০ সাল থেকে।
শুধু ইংরেজিতে বাজেট: ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত শুধুমাত্র ইংরেজিতে বাজেট থাকত। ১৯৫৫-৫৬ সাল থেকে ইংরেজি এবং হিন্দিতে বাজেট তৈরি করা হতে থাকে। সেই ধারার সূচনা করেছিলেন অর্থমন্ত্রী সিডি দেশমুখ।
কেন্দ্রীয় বাজেট ও সংখ্যার খেলা
৩: এখনও পর্যন্ত মোট তিনবার কোনও প্রধানমন্ত্রী সাধারণ বাজেট পেশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ১৯৫৮ সালে জওহরলাল নেহরু, ১৯৭০ সালে ইন্দিরা গান্ধী এবং ১৯৮৭ সালে রাজীব গান্ধী বাজেট পেশ করেছিলেন। প্রতিটি ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ইস্তফা দিয়েছিলেন।
১৮,৬৫০: ১৯৯১ সালে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী মনমোহন সিং যে বাজেট পেশ করেছিলেন, তাতে ১৮,৬৫০টি শব্দ ছিল। যা শব্দের নিরিখে ভারতের ইতিহাসে দীর্ঘতম বাজেট। সেই বাজেটে ভারতীয় অর্থনীতিতে নয়া যুগের সূচনা করেছিলেন মনমোহন সিং। আর শব্দের নিরিখে সবথেকে ছোট বাজেট পেশ করেছিলেন মোরারজি দেশাইয়ের নেতৃত্বাধীন সরকারের অর্থমন্ত্রী হিরুভাই এম প্যাটেল। মাত্র ৮০০ শব্দের বাজেট পেশ করেছিলেন।
৭২ শতাংশ: 'লাইভ মিন্ট'-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, সার্বিকভাবে বাজেটে যে পরিমাণ অর্থের সংস্থান করা হয়, সাধারণত তার একেবারে সামান্য ভাগ পেয়ে থাকে ৭২ শতাংশ মন্ত্রক। গত ১৬ বছরে কেন্দ্রের মোট খরচের এক শতাংশেরও কম বরাদ্দ করা হয়েছিল ৪২টি মন্ত্রক ও দফতরের জন্য। অন্যদিকে গড়ে ৫০ শতাংশের বেশি বরাদ্দ গিয়েছে মাত্র দুটি মন্ত্রকের কাছে - অর্থ মন্ত্রক এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
১৬২ মিনিট: দীর্ঘতম বাজেট ভাষণের রেকর্ড আছে নির্মলা সীতারামনের ঝুলিতে। ২০২০ সালে ২ ঘণ্টা ৪২ মিনিটের (১৬২ মিনিট) বাজেট পেশ করেছিলেন সীতারামন।