গত কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণে বন্যা পরিস্থিতির কবলে পড়েছে অসম। এ পর্যন্ত ২৯টি জেলায় ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ২১ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে
জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহতেই অসমে প্রবল বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। (AP Photo/Anupam Nath)
বিশ্বকল্যাণ পুরকায়স্থ
শুক্রবার ভোরে অসমের গুয়াহাটিতে ভয়াবহ ভূমিধসে ৩৫ বছরের এক মহিলা ও তাঁর ১৪ বছরের ছেলের মৃত্যু হয়েছে। ধসে তাদের বাড়ি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তার জেরেই মৃত্যু হয় তাদের।
মৃতের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, সকাল ৬টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে গুয়াহাটির জোড়াবাত এলাকায়। 'তারা যখন বাড়িতে ঘুমোচ্ছিলেন তখন প্রচুর পরিমাণে কাদা নিচে নেমে আসে এবং আমাদের বাড়িটি ধসে পড়ে,' তারা জানিয়েছিলেন।
মৃতদের নাম রুমি দাস ও তাঁর ছেলে চম্পক দাস। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, রুমি ও তার দুই সন্তান চম্পক ও রিমা দাস ধসে পড়া বাড়ির নিচে চাপা পড়েন এবং উদ্ধার করতে আসা স্থানীয়রা কেবল মেয়েকে টেনে বের করতে সক্ষম হন।
রিমার হাত নড়াচড়া করছিল, আমরা সাবধানতার সঙ্গে তাকে উদ্ধার করি এবং পুলিশকে ঘটনাটি জানাই বলে স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান।
পুলিশ জানিয়েছে, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এসডিআরএফ) কাজ করছে। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে রুমি ও চম্পকের দেহ উদ্ধার করেন তাঁরা।
পুলিশ জানিয়েছে, সকলকে গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা রুমি ও চম্পককে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এক আধিকারিক বলেন, 'আমরা বিষয়টি আরও তদন্ত করছি।
জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (ডিডিএমএ) কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে এবং পরিবারটিকে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে।
গত কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণে বন্যা পরিস্থিতির কবলে পড়েছে অসম। এখন পর্যন্ত ২৯টি জেলায় ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ২১ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আসাম রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর রাজ্যে ঝড়, ভূমিধস ও বন্যায় ৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সব মিলিয়ে একেবারে ভয়াবহ পরিস্থিতি। তার মধ্যেই ভয়াবহ ধসে মৃত্যু হল দুজনের। মা ও ছেলের এই মর্মান্তিক পরিণতিতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।