'শীঘ্রই গাজায় হামাসের খুনি এবং ধর্ষকদের মাথার উপর নরকের দরজা খুলে যাবে।' গাজা দখলের আগে সশস্ত্র গোষ্ঠীকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইজরায়েল।হামাস নিরস্ত্রীকরণ, প্যালেস্তাইনের ভূখণ্ডে অবশিষ্ট সকল বন্দিকে মুক্তি এবং তেল আভিভের শর্ত মেনে যুদ্ধ বন্ধ করতে রাজি নয়। অন্যদিকে, ইজরায়েল গাজায় তাদের আক্রমণাত্মক কার্যক্রম সম্প্রসারণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ঠিক সেই সময়ই গাজা শহরকে ধ্বংস করে দেওয়া হবে হুমকি দিলেন ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী।শুক্রবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইজরায়েল কাটজ বলেন, 'শীঘ্রই গাজায় হামাসের খুনি এবং ধর্ষকদের মাথার উপর নরকের দরজা খুলে যাবে- যতক্ষণ না তারা যুদ্ধ শেষ করার জন্য ইজরায়েলের শর্তে সম্মত হয়, প্রধানত সমস্ত বন্দিদের মুক্তি এবং তাদের নিরস্ত্রীকরণ।' তিনি আরও বলেন, 'যদি তারা একমত না হয়, তাহলে রাফা এবং বেইত হানুনের মতো দশা হয়ে যাবে হামাসের রাজধানী গাজা।' বস্তুত, পূর্ববর্তী ইজরায়েলি অভিযানে গাজার এই দু’টি শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়ে গিয়েছে। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজা শহর দখলের জন্য সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা প্রদানের কথা বলার একদিন পরই কাটজের এই মন্তব্য করলেন। নেতানিয়াহু গাজার বাকি সকল বন্দিকে মুক্ত করার লক্ষ্যে আলোচনারও নির্দেশ দিয়েছেন। নেতানিয়াহু বলেছেন যে গাজা শহরের নিয়ন্ত্রণ এবং হামাসের শক্ত ঘাঁটি ধ্বংস করার অভিযানের পাশাপাশি বন্দিদের মুক্তির প্রচেষ্টাও জারি থাকবে।ইজরায়েলের পরিকল্পনা চলতি সপ্তাহের শুরুতে, ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক গাজা শহর দখলে করার জন্য প্রায় ৬০ হাজার রিজার্ভ সেনা মোতায়েনের অনুমোদন দিয়েছে। নেতানিয়াহু এক ভিডিও বিবৃতিতে বলেছেন, 'হামাসকে পরাজিত করা এবং আমাদের সকল বন্দিকে মুক্তি দেওয়া- এই দু’টি বিষয় একসঙ্গে এগিয়ে যাবে।' তবে পরবর্তী পর্যায়ে আলোচনার কী হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।অন্যদিকে, হামাস বলেছে যে তারা যুদ্ধ শেষ করার বিনিময়ে বন্দিদের মুক্তি দিতে রাজি। কিন্তু প্যালেস্তাইন রাষ্ট্র গঠন না করে অস্ত্র ত্যাগ করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। হামাসের মধ্যস্থতাকারীরা ইজরায়েলের প্রতিক্রিয়ার জন্য কয়েকদিন ধরে অপেক্ষা করছেন।এএফপির প্রতিবেদন অনুসারে, নতুন চুক্তিতে পর্যায়ক্রমে বন্দিদের মুক্তির উল্লেখ রয়েছে। অন্যদিকে ইজরায়েলের দাবি, যে কোনও চুক্তিতে সকল বন্দিকে একবারে মুক্তি দিতে হবে। তবে ইজরায়েলের যুদ্ধ সম্প্রসারণ এবং গাজা শহর দখলের পরিকল্পনা আন্তর্জাতিকভাবে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরেও তীব্র বিরোধিতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে নেতানিয়াহুকে।৭ অক্টোবর, ২০২৩ সালে প্যালেস্তাইনের সংগঠন হামাসের ইজরায়েলে আক্রমণের পর থেকেই গাজায় যুদ্ধ শুরু হয়। এই আক্রমণে কয়েক ডজন নিহত এবং বন্দি হয়ে যান। ৭ অক্টোবর, ২০২৩ সালে হামাসের হামলায় প্রায় ১,২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জনকে অপহরণ করা হয়, যাদের বেশিরভাগই যুদ্ধবিরতি বা অন্যান্য চুক্তিতে মুক্তি পেয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রক বৃহস্পতিবার জানিয়েছে যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে কমপক্ষে ৬২,১৯২ জন প্যালেস্তিনিয় নিহত হয়েছেন।