'সাংবাদিকদের হত্যা মর্মান্তিক এবং অত্যন্ত দুঃখজনক।' গাজার নাসের হাসপাতালে ইজরায়েল সেনার হামলার তীব্র নিন্দা করল ভারত। গত সোমবার দক্ষিণ গাজার নাসের হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সেনা। আর সেই হামলায় অন্তত ২১ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে পাঁচ জন সাংবাদিকও রয়েছেন। (আরও পড়ুন: ট্রাম্পের ৫০% ট্যারিফে ভারতের কোন কোন সেক্টর সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হবে?)
আরও পড়ুন: আবার হতে পারে ভারত-পাক যুদ্ধ, বড় মন্তব্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের
দক্ষিণ গাজার একটি বড় মেডিকেল কমপ্লেক্স নাসের হাসপাতাল, যা যুদ্ধের শুরু থেকে একাধিকবার ইজরায়েলের হামলার শিকার হয়েছে। সূত্রের খবর, ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে এই দুই বছরের যুদ্ধে প্রায় ২০০ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।বুধবার বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, 'সাংবাদিকদের এই হত্যা মর্মান্তিক এবং অত্যন্ত দুঃখজনক। ভারত সব সময়ই সংঘাতে অসামরিক প্রাণহানির নিন্দা করেছে।' জানা গেছে, রয়টার্স, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস, আল জাজিরা ও মিডল ইস্ট আই-এ কর্মরত পাঁচ সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে সোমবারের হামলায়। এছাড়াও অন্য আরেকটি ঘটনায় খান ইউনিসে প্রাণ হারিয়েছেন আরও এক সাংবাদিক। এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) প্রধান বলেছেন, সোমবার নাসের হাসপাতালে হামলায় চারজন স্বাস্থ্যকর্মীও নিহত হয়েছেন। (আরও পড়ুন: 'এত শুল্ক চাপাব, মাথা ঘুরে যাবে', ভারত-পাক যুদ্ধের সময় নাকি হুমকি দেন ট্রাম্প)
এক বিবৃতিতে ইজরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, তারা সোমবার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের কাছে একটি হামলা চালিয়েছে। তাদের সেনাপ্রধান যত দ্রুত সম্ভব প্রাথমিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং তারা নিরীহ ব্যক্তিদের যে কোনও ক্ষতিতে অনুতপ্ত। সেই বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, তাদের আক্রমণের লক্ষবস্তু কখনই সাংবাদিকেরা ছিলেন না।ঘটনা প্রসঙ্গে গাজার সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র বাসাল বলেন, ‘প্রথমে একটি বিস্ফোরক ড্রোন নাসের হাসপাতালের একটি ভবনে হামলা চালায়, এরপর আহতদের সরানোর সময় একটি বিমান হামলা চালানো হয়।’ কাতার-ভিত্তিক টিভি চ্যানেল আল জাজিরার একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাঁদের ফটোসাংবাদিক ও ক্যামেরাম্যান মহম্মদ সালামা এই হামলায় নিহত হয়েছেন। আল জাজিরা এক বিবৃতিতে বলেছে, 'আল জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক এই জঘন্য অপরাধের তীব্র নিন্দা জানায়। ইজরায়েলি দখলদার বাহিনী সত্যকে নীরব করার জন্য একটি পরিকল্পিত অভিযানের অংশ হিসেবে সাংবাদিকদের সরাসরি লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে ও হত্যা করেছে।'অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাঁরা ৩৩ বছর বয়সি ভিজ্যুয়াল জার্নালিস্ট মারিয়াম দাগ্গা’র মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ ও দুঃখিত। (আরও পড়ুন: 'কালকে কল ব্যাক করুন আমাকে', মোদীর ফোন না ধরার খবর প্রকাশের পর কী বললেন ট্রাম্প)
আরও পড়ুন: ৭টার বেশি যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয়ে থাকতে পারে,ভারত-পাক সংঘাত নিয়ে নয়া দাবি ট্রাম্পের
আরও পড়ুন: জ্বালানি চুক্তি নিয়ে রাশিয়ার সাথে কথা US-র, 'ফেল করা' ট্রাম্পের দ্বিচারিতা সামনে
রয়টার্সের একজন মুখপাত্র বলেন, 'গাজায় নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় রয়টার্সের চুক্তিবদ্ধ কর্মী হুসাম আল-মাসরি’র মৃত্যু এবং আমাদের আরেক কর্মী হাতেম খালেদের আহত হওয়ার খবরে আমরা শোকাহত।' প্যালেস্টাইনের জার্নালিস্টস সিন্ডিকেট নিহত অন্য দুই সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করেছে, তাঁরা হলেন মোয়াজ আবু তাহা এবং আহমদ আবু আজিজ। বস্তুত, নাসের হাসপাতাল হল গাজা উপত্যকার হাতে গোনা কয়েকটি স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্রের মধ্যে একটি, যা এখনও আংশিকভাবে চালু রয়েছে।উল্লেখ্য, গাজা সংঘর্ষ থামাতে মরিয়া ইজরায়েলের সাধারণ মানুষও। ‘হোস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিস ফোরাম’ নামের এক সংগঠন আন্দোলনের ডাক দিয়েছে।অন্যদিকে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি জানিয়েছিলেন, তিনি ৫০ জন পণবন্দিকে ফেরানোর জন্য আলোচনার নির্দেশ জারি করেছেন। অথচ গাজায় নতুন করে হামলা শুরু হয়েছে। নেতানিয়াহুর এই আচরণে বিক্ষোভকারীদের ধারণা তিনি শান্তি চুক্তিতে আদৌ আগ্রহী নন। বরং পণবন্দিদের বলি দিতেই চাইছেন তিনি। আর এখান থেকেই বিক্ষোভের সূত্রপাত। মনে করা হচ্ছে, হামাসের কাছে জীবিত পণবন্দির সংখ্যা প্রায় ২০।