বিদেশের মাটিতে নির্যাতিত ভারতীয় বধূ। শিকাগোতে মার্কিন পুলিশ স্বামীর বিরুদ্ধে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন হায়দারাবাদের এক তরুণী। আর এই বিষয়ে দ্রুত হস্তক্ষেপ চেয়ে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের কাছে চিঠি লিখেছেন তিনি।
জানা গেছে, ২০২২ সালের জুনে হায়দরাবাদের বাসিন্দা হানা আহমেদ খানের (২৫) সঙ্গে শিকাগো পুলিশে কর্মরত মার্কিন নাগরিক মহম্মদ জয়েন উদ্দিন খানের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাঁকে হায়দরাবাদে রেখেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যান স্বামী। কিন্তু দুই বছর তাঁর কাছে হানাকে নিয়ে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। শেষমেশ ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে, হানা শিকাগোতে তাঁর স্বামীর কাছে চলে যান। কিন্তু সেখানে তিনি মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন স্বামীর বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, তরুণীর অভিযোগ, ২০২৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ওমরাহ অজুহাতে তার স্বামী ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁকে হায়দরাবাদে নিয়ে আসেন। এরপর সোমাজিগুড়ার পার্ক হোটেলে তাঁরা ওঠেন। এরমধ্যে হানা যখন তার বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করতে যান। সেই সুযোগে তার স্বামী হানার পাসপোর্ট, গ্রিন কার্ড, গয়না এবং অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়ে হোটেল থেকে বেরিয়ে যান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যান। এই ঘটনার পর হানা পাঞ্জাগুড়া থানায় অভিযোগের প্রেক্ষিতে এফআইআর দায়ের করা হয়।
গত ২২ অগাস্ট এই বিষয়ে হস্তক্ষেপের আবেদনে বিদেশমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখেছেন হানা। চিঠিতে হানা জানান, 'স্বামীর ভিসা প্রক্রিয়াকরণের পর তিনি ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ তারিখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, আমার যাওয়ার পর থেকেই আমাকে মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়। তা সত্ত্বেও, আমি আশাবাদী ছিলাম যে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। কিন্তু স্বামীর দুর্ব্যবহার চলতেই থাকে।' পরে হানা সাংবাদিকদের বলেন, এক পর্যায়ে এসে স্বামীর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। কিন্তু পুলিশ জয়েন উদ্দিন খানকে সতর্ক করে ছেড়ে দেয়। ওই তরুণীর আরও অভিযোগ, তাঁর আপত্তি সত্ত্বেও০ স্বামী তাকে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা দায়ের করতে বাধ্য করেছিলেন। হানা তার নথিপত্র উদ্ধার করতে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাওয়ার জন্য বিদেশমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছেন। একই সঙ্গে তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে আইনি মামলা লড়ার সাহায্য চেয়েছেন। হানার অভিযোগ, 'আমি কনস্যুলেটে গিয়েছিলাম কিন্তু তেমন কোনও সাহায্য পাইনি। গত চার-পাঁচ মাস ধরে আমি কষ্ট পাচ্ছি।' পাশাপাশি ওই তরুণী অভিযোগ করেন, তার পরিবার বিয়েতে ২০ লক্ষ টাকা খরচ করেছে এবং এমনকী পণ হিসেবে চাওয়া সোনার গোয়ান এবং মূল্যবান উপহারও দিয়েছে জয়েন উদ্দিন খানকে।