'যখন কর্তব্যের মধ্যে অহংকার প্রবেশ করে, তখন পদক্ষেপ করা আমার দায়িত্ব।' রোগীর সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে মেজাজ হারিয়ে গোয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসারকে প্রকাশ্যে বরখাস্ত করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিশ্বজিৎ রানে। আর এরপরেই প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছেন মন্ত্রী। একজন সিনিয়র সাংবাদিকের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর এই পদক্ষেপ নেন তিনি।
জানা গেছে, বাম্বোলিনে অবস্থিত জিএমসিএইচ হল একটি সরকার পরিচালিত হাসপাতাল। সেখানে ১,০০০-এরও বেশি বেডের ব্যবস্থা রয়েছে। এটি গোয়ার পাশাপাশি মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকের নিকটবর্তী অঞ্চলের রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করে। সেই হাসপাতালে হঠাৎ পরিদর্শনে যান রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, তার আগে মন্ত্রীকে ফোন করে এক সাংবাদিক অভিযোগ করেন, হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি ওয়ার্ডের চিকিৎসক তার শাশুড়ির সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। এরপরেই জিএমসিএইচ-এর মেডিক্যাল সুপারিনটেনডেন্ট ডাঃ রাজেশ পাতিলের সঙ্গে রানে হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি ওয়ার্ডে যান। মেডিক্যাল অফিসারকে ডেকে মন্ত্রী বলেন, 'আপনি আপনার জিহ্বা নিয়ন্ত্রণ করতে শিখুন, আপনি একজন ডাক্তার। আমি সাধারণত মেজাজ হারাই না। যতই কাজের চাপ থাকুক না কেন, আপনাকে রোগীদের সঙ্গে সঠিকভাবে আচরণ করতে হবে।আপনি একজন ডাক্তার এবং দরিদ্র মানুষের সেবা করার জন্য এখানে এসেছেন।'
আরও পড়ুন-দুবাইয়ে স্কুবা ডাইভিং করতে গিয়ে মৃত্যু ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারের
আর এই ঘটনার ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা। গোয়ার কংগ্রেস সভাপতি অমিত পাটকর বলেন, 'জিএমসিতে আজকের ঘটনাটি কোনও পরিদর্শন নয় - এটি গোয়ার সকল স্বাস্থ্য কর্মীর অপমান। স্বাস্থ্যমন্ত্রী একটি হাসপাতালে ঢুকেছেন, একজন সিনিয়র ডাক্তারকে অপমান করেছেন। এটি শাসনব্যবস্থা নয় - এটি কেলেঙ্কারিতে জর্জরিত একজন মন্ত্রীর ক্ষমতার অপব্যবহার।' ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের গোয়া শাখাও একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আচরণকে অত্যন্ত দুঃখজনক এবং অগ্রহণযোগ্য বলে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
আরও পড়ুন-দুবাইয়ে স্কুবা ডাইভিং করতে গিয়ে মৃত্যু ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারের
এদিকে সমালোচনা শুরু হতেই মন্ত্রী বলেন, 'হ্যাঁ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে আমি হস্তক্ষেপ করেছি এবং আমি স্বীকার করি যে আমার কথা আরও পরিমাপ করা বলা যেত। আমি সমালোচনার ঊর্ধ্বে নই। আমি কীভাবে কথা বলেছি তার সম্পূর্ণ দায় আমি নিচ্ছি এবং আশ্বস্ত করছি যে এই বিষয়ের আর পুনরাবৃত্তি হবে না।' তবে তিনি বলেন, 'সমাজে ডাক্তারদের একটি মহৎ উদ্দেশ্য রয়েছে এবং জিএমসিএইচ-এ তাদের বেশিরভাগই অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে পরিষেবা প্রদান করেন। আমি আমাদের হাসপাতালে আসা প্রত্যেক রোগীর অধিকারের জন্য কাজ এবং লড়াই করতে থাকব।'