৩০ নভেম্বরের পর ভারতের উপর আরোপিত শাস্তিমূলক ২৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার করা হতে পারে মার্কিন সরকার। এমনই মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ভি অনন্ত নাগেশ্বরন। তিনি আশাবাদী, এই বিষয়টি ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলাকালীনই বাণিজ্যিক বিধিনিষেধের শিথিলতার ইঙ্গিত পাওয়া যাবে।
কলকাতায় মেরচান্টস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভি অনন্ত নাগেশ্বরন বলেন, ‘আমরা সবাই ইতিমধ্যেই কাজে নেমে পড়েছি, এবং আমি এখানে শুল্ক নিয়ে কিছু কথা বলব।’ তিনি বলেন, ‘মূল ২৫ শতাংশ পারস্পরিক শুল্ক এবং অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শাস্তিমূলক শুল্ক-দুটোর একটিও প্রত্যাশিত ছিল না। আমি এখনও বিশ্বাস করি যে, ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি দ্বিতীয় ২৫ শতাংশ শুল্কের কারণ হতে পারে, কিন্তু সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহের ঘটনাবলী বিবেচনা করে আমি মনে করি এবং এটি আমার অনুমান যে,৩০ নভেম্বরের পর শাস্তিমূলক শুল্ক আর থাকবে না।’ মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা আরও জানান, ‘আমি বিশ্বাস করি যে, পরবর্তী কয়েক মাসের মধ্যে শাস্তিমূলক শুল্ক এবং সম্ভবত পারস্পারিক শুল্ক নিয়ে একটি সমাধান আসবে।’ তিনি বলেন, ভারতের রপ্তানি বৃদ্ধি বর্তমানে বার্ষিক ৮৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে রয়েছে এবং এটি ১ ট্রিলিয়ন ডলার পৌঁছাতে চলেছে। যা মোট জিডিপির ২৫ শতাংশের সমান, যা একটি সুস্থ ও উন্মুক্ত অর্থনীতির ইঙ্গিত দেয়।
আরও পড়ুন-কথা রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী! অভিনেত্রীর বাড়িতে গুলিবর্ষণ-কাণ্ডে এনকাউন্টার, ধন্যবাদ বাবার
নাগেশ্বরনের এই মন্তব্য এসেছে মাত্র কয়েক দিন পর, যখন ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রকের বিশেষ সচিব তথা প্রধান বাণিজ্য আলোচক রাজেশ আগরওয়াল নয়া দিল্লিতে বৈঠক করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডান লিঞ্চের সঙ্গে। ট্রাম্প প্রশাসন গত মাসে ভারতের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের পর এটিই ছিল দুই দেশের আলোচকদের মধ্যে প্রথম সরাসরি বৈঠক। ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের অব্যাহত জ্বালানি বাণিজ্যই নতুন করে এই কঠোর শুল্ক নীতির কারণ।
আরও পড়ুন-কথা রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী! অভিনেত্রীর বাড়িতে গুলিবর্ষণ-কাণ্ডে এনকাউন্টার, ধন্যবাদ বাবার
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৯৭৭ সালের ইন্টারন্যাশনাল এমার্জেন্সি ইকোনমিক পাওয়ার্স অ্যাক্ট ব্যবহার করে, বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করেন। সেই সময় ভারতের উপরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল, কিন্তু পরে এটি আরও ২৫ শতাংশ বেড়ে ৫০ শতাংশে এসে দাঁড়ায়। এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ শুল্ক রয়েছে ভারত এবং ব্রাজিলের উপর- ৫০ শতাংশ। ট্রাম্পের শুল্কের ফলে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যে ব্যাঘাত ঘটেছে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কেরও অবনতি হয়েছে। এমন সিদ্ধান্তের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরেও ট্রাম্প সমালোচিত হচ্ছেন। এরমধ্যেই আদালতে বড় ধাক্কা খেয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিভিন্ন দেশের উপর শুল্ক আরোপ করে বিশ্ব অর্থনীতিকে যে ভাবে তিনি ওলট-পালট করে দিয়েছেন, তা বেআইনি। এমনটাই জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক আপিল আদালত।