ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে সামরিক সংঘর্ষ অষ্টম দিনে পদার্পন করল। এই সংঘাতের জেরে ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য। পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার বদলে উত্তেজনা বেড়েছে কয়েকগুণ।একাদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হুঁশিয়ারি দিচ্ছে ইরানকে। অন্যদিকে রাশিয়া স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে ইজরায়েলকে।এই আবহে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে ‘নিষিদ্ধ’ ক্লাস্টার বোমা ব্যবহার করার অভিযোগ উঠল ইরানের বিরুদ্ধে।ইজরায়েলি সেনার তরফে এমনটাই জানানো হয়েছে। (আরও পড়ুন: এখনও 'ICU'-তে পাকিস্তানের রহিম ইয়ার খান বিমানঘাঁটি, বন্ধ থাকবে ৪ জুলাই পর্যন্ত)
আরও পড়ুন: USA কি ইরানে হামলা করবে? কবের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প? জানাল হোয়াইট হাউজ
আইডিএফের ফ্রন্ট কমান্ড নিশ্চিত দাবি করেছে, বৃহস্পতিবার ইরান তেল আভিভে যে হামলা চালিয়েছে তার মধ্যে অন্তত একটি ছিল ক্লাস্টার বোমা ওয়ারহেডযুক্ত।পাশাপাশি ইরান ইজরায়েলে ক্রমাগত বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে চলেছে, মৃত্যু হচ্ছে সাধারণ মানুষের। ইজরায়েলি সংবাদ প্রতিবেদনে ইজরায়েলি সেনাবাহিনীকে উদ্ধৃত করে জানানো হয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রের ওয়ারহেডটি প্রায় ৪ মাইল (৭ কিমি) উচ্চতায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং মধ্য ইজরায়েলের প্রায় ৫ মাইল (৮ কিমি) ব্যাসার্ধে প্রায় ২০টি সাবমেরিন নিক্ষেপ করে।টাইমস অফ ইজরায়েলের সামরিক সংবাদদাতা ইমানুয়েল ফ্যাবিয়ান জানিয়েছেন, মধ্য ইজরায়েলি শহর আজোরের একটি বাড়িতেও একটি ছোট বোমা আঘাত হানে, যার ফলে কিছু ক্ষতি হয়। (আরও পড়ুন: খলিস্তানি চরমপন্থা কানাডার জন্য হুমকি, দাবি সেই দেশের গোয়েন্দা রিপোর্টে)
আরও পড়ুন: মহাকাশে যেতে আরও অপেক্ষা করতে হবে ভারতের শুভাংশুকে, ষষ্ঠবার কেন স্থগিত মিশন?
ক্লাস্টার বোমা কী?
ক্লাস্টার বোমা হল এক ধরনের অস্ত্র যা একবার বিস্ফোরণের বদলে টুকরো টুকরো হয়ে যায় এবং বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ছোট ছোট বোমার মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটায়। মাঝ আকাশে এই মিসাইল বা বম্ব ফুলের পাপড়ির মতো খুলে যায় এবং টার্গেট এলাকায় পরপর, একাধিক বিস্ফোরণ ঘটায়।বোমারু বিমান বা জমি থেকেও এই বোমা ছোড়া যায়। এই বোমার ক্ষেত্রে সবথেকে ভয়ের বিষয় হল, একসঙ্গে একাধিক বোমা ছররার মতো ছড়িয়ে পড়ে। মাটিতে পড়ার পর কিছু বোমায় বিস্ফোরণ হয়, কিছু বোমা ফাটে না। তবে এগুলি অ্যাকটিভ বা সক্রিয়ই থেকে যায়। সাধারণ মানুষ যদি ভুলবশত এর সামনে চলে যান বা স্পর্শ করেন, তবে বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে যেতে পারেন। ভিড় বা ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় এই বোমা আছড়ে পড়লে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। তবে ইজরায়েলে কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বা প্রাণহানি হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি। বিশ্বের ১২০টি দেশ এর ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে।ফলে আন্তর্জাতিক আঙিনায় প্রশ্ন উঠেছে, এই বোমা ব্যবহার করে ইরান কি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও যুদ্ধ আইন লঙ্ঘন করল? (আরও পড়ুন: মদের কারণেই বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বাড়িতে পুড়েছিল নগদ টাকা! দাবি রিপোর্টে)
আরও পড়ুন: ট্রেনে সংরক্ষিত আসনের টিকিট কাটার নিয়মে বড় বদল, কী জানাল রেল?
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের মধ্যস্থতার দাবি যে 'অবান্তর' তা স্পষ্ট হল পাক উপপ্রধানমন্ত্রীর কথাতেই
২০০৮ সালে এই বোমা নিষিদ্ধ করে ১২০টির বেশি দেশ, যার মধ্যে রয়েছে ফ্রান্স ও ব্রিটেন। কিন্তু ‘কনভেনশন অফ ক্লাস্টার মিউনিশনস’ আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী এর ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হলেও ইজরায়েল, ইরান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এতে অংশ নেয়নি। রাশিয়া, চিন ও ভারতের মতো দেশও এই চুক্তিতে সই করেনি। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গুচ্ছ বোমা উৎপাদন, ব্যবহার ও পরিবহন নিষিদ্ধ। চুক্তি অনুযায়ী, বেসামরিক জনগণের ওপর নির্বিচারে মারাত্মক প্রভাব রাখার কারণে ক্লাস্টার অস্ত্রের ব্যবহার ও মজুতকে বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছে। বিশেষ করে, শিশুদের এই অস্ত্রের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কারণ এই বোমাগুলো আবাসিক বা কৃষি এলাকার আশপাশে পড়ে থাকতে দেখা যায়, অনেক সময় বোমাগুলোকে ছোট খেলনার মতো দেখায়; ফলে কৌতূহলবশত শিশুরা এগুলোর প্রতি আকৃষ্ট হয়।