ব্রাশ করতে করতে গিলে ফেলেছিলেন আস্ত টুথব্রাশটাই। প্রাণহানির ঝুঁকি তৈরি হয়েছিল রীতিমতো। ২৪শে মে ভোররাতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে এক ৩৭ বছর বয়সী মহিলাকে। অবশেষে চিকিৎসক সঞ্জয় বসু ও তাঁর টিমের চেষ্টায় প্রাণ ফিরল ওই রোগিনীর। মুকুন্দপুর মণিপাল হাসপাতালে রাত ২টো নাগাদ ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। এরপর এক জটিল এন্ডোস্কপিক পদ্ধতিতে রোগীর অস্ত্রোপচার হয়। পাকস্থলি থেকে সফলভাবে বের করে আনা হয় ওই টুথব্রাশটি ।
এক্সরে-তে দেখা যায়নি টুথব্রাশ
টুথব্রাশ গিলে ফেলার পর থেকেই রোগী শ্বাসকষ্ট এবং বুকের ব্যথায় ভুগছিলেন। জরুরি প্রোটোকল নিয়ম মেনে চিকিৎসক একটি এক্স-রে করলেও প্লাস্টিকের টুথব্রাশটি তাতে ধরা পড়েনি। চিকিৎসক রাতেই হাসপাতালে পৌঁছে একটি এমার্জেন্সি আপার জিআই এন্ডোস্কোপি করেন। সেখানে দেখা যায়, টুথব্রাশটি পাকস্থলির গভীরে আটকে আছে।
আরও পড়ুন - চায়ে চিনি খেলে কি আদৌ রক্তে সুগার বাড়ে? চিনি কখন নিরাপদ তা কি জানেন?
কী বলছেন চিকিৎসক
চিকিৎসকের কথায়, ‘এটি অত্যন্ত সংকটজনক পরিস্থিতি ছিল। এমন দীর্ঘ আকৃতির কোনও বস্তু পাকস্থলিতে থেকে গেলে তা অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ ঘটায়। পাকস্থলির দেওয়ালে ছিদ্র করে দেয়। পুরো পাচনতন্ত্রে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। অনেক সময় ছোট বস্তু বা খাদ্যনালিতে আটকে গেলে এন্ডোস্কোপি প্রক্রিয়াটি তুলনামূলকভাবে সহজ হয়। কিন্তু এই ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ ছিল বস্তুটি পাকস্থলির একেবারে গভীরে চলে গিয়েছিল। সেখান থেকে এন্ডোস্কোপের মাধ্যমে সাবধানে বের করা খুবই জটিল কাজ। এক পর্যায়ে এটি ফের উপরের খাদ্যনালিতে আটকে যায়। তবে ধাপে ধাপে পরিকল্পিতভাবে এবং রোগীর মাথা নির্দিষ্ট ভঙ্গিতে রেখে অবশেষে সেটি মুখ দিয়ে বের করা সম্ভব হয়।’
আরও পড়ুন - PCOS আর ইনসুলিনের জেরে মেদ বাড়ছে? এই ৩ অভ্যাসে তরতর করে কমবে ওজন
ভোরেই বাড়ি ফিরল রোগী
এন্ডোস্কোপের মাধ্যমে প্রবেশ করানো একটি স্নেয়ার ব্যবহার করে চিকিৎসক দলটি ধীরে ধীরে টুথব্রাশটি টেনে তোলে। রোগীর মাথা বাড়িয়ে নিরবিচারে নজরদারির মধ্যে রাখা হয় এবং শেষমেশ মুখ দিয়ে টুথব্রাশটি সফলভাবে বের করা হয়। পুরো প্রক্রিয়াটি ৪৫ মিনিট সময় লাগে। ভোর ৫টায় শেষ হয় কাজ। ওইদিনই রোগীকে সুস্থ অবস্থায় হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।