Sahitya Akademi Controversy: ডিসেম্বরে ঘোষণা হওয়ার কথা ছিল সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার। কিন্তু হয়নি। তার পরেও কেন হুঁশ ফিরল না তামাম বাঙালির? প্রশ্ন সাহিত্যিকের।
Ad
বিস্ফোরক লেখক স্বপ্নময় চক্রবর্তী
Sahitya Akademi Award: মোট ২৪টি আঞ্চলিক ভাষায় দেওয়া হয়সাহিত্য অ্যাকাডেমি সম্মান। বাংলা ভাষা এই বছর বঞ্চিত হল সেই তালিকা থেকে। ১৯৭৩ সালে শেষবার ঘটেছিল এমন ঘটনা। সেই বছর বাংলা ভাষায় কোনও পুরস্কার দেওয়া হয়নি। অ্যাকাডেমি সভাপতির কথায়, এই বছর টেকনিক্যাল কারণে বাংলা ভাষাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঠিক কী সেই ‘টেকনিক্যাল’ কারণ, তা এখনও জানা যায়নি। দীর্ঘ ৫২ বছর পর শুধু ‘টেকনিক্যাল’ কারণে বঞ্চনার শিকার বাঙালির গর্বের ভাষা? কিন্তু এর থেকেও বড় প্রশ্ন— সত্যিই কি গর্বের? তাই যদি হবে, ডিসেম্বরে যে পুরস্কার ঘোষণা হওয়ার কথা, তা না হওয়ার পরও কেন কোনও প্রশ্ন উঠল না? কেন প্রশ্ন তুলল না সাহিত্যমহল ও সংবাদ মাধ্যম? ২০২৩ সালে সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কারপ্রাপক স্বপ্নময় চক্রবর্তী সেই প্রশ্নই তুললেন গোড়ায়। পাশাপাশি উঠে এল বঞ্চনার প্রসঙ্গও। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার সঙ্গে এক্সক্লুসিভ কথোপকথনে ধূমায়িত হল উষ্মা।
‘এতদিন কারও মাথাব্যথা দেখিনি’
বর্ষীয়ান সাহিত্যিক প্রথমেই অবশ্য অ্যাকাডেমির বদলে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন তামাম বাংলা ভাষাভাষীদের দিকে। স্বপ্নময়ের কথায়, ‘একজন কবি ফেসবুকে একটি ছোট্ট পোস্ট করার পরই দেখলাম হইচই পড়ে গেল। অথচ সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কারের ঘোষণা ডিসেম্বরের শেষেই হয়ে যায়। ২০২৪ সালে তা হয়নি। তখনও কারও কোনও মাথাব্যথা দেখিনি। কোনও লেখকের কোনও ফেসবুক পোস্ট দেখিনি। খবরের কাগজে কোনও প্রতিবেদনও দেখিনি। ঘটনাচক্রে কবির ওই পোস্টটিও সাহিত্য অ্যাকাডেমির আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর করা।!’
স্বপ্নময়ের কথায়, এখন নানারকম গুজব ছড়াচ্ছে পুরস্কার না দেওয়ার কারণ পর্যালোচনা করে। কিন্তু আদৌ সেগুলোর সত্যতা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ থেকে যায়। সাহিত্যিকের কথায়, ‘শোনা কথা, একজন প্রবীণ জুরি সদস্য নাকি শেষ মুহূর্তে আসেননি। তাই বলে আরেকটা বৈঠক করা গেল না? পুরস্কারটাই বাতিল করে দিতে হল?’
'জলের উপর পানি' উপন্যাসের জন্য সম্মানিত হন লেখক
‘খারাপ লাগছে ভীষণ’
কোনও উপযুক্ত কারণ না দেখিয়েই পুরস্কার বাতিলের ঘটনায় অন্যদের মতোই লেখকেরও হতবাক ও আহত। তাঁর কথায়,‘ব্যাপারটা আমারও খারাপ লেগেছে। গত জানুয়ারি মাসে আমি খোঁজখবর করেছিলাম অনেকের কাছে। এই বছর সাহিত্য অ্যাকাডেমি কেন এখনও ঘোষণা করা হল না - তাই নিয়ে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখেছি, কেউ সে ব্যাপারে বিশেষ ভাবিত নয়।’
লেখক স্বপ্নময় চক্রবর্তীর কথায়, ডিসেম্বর থেকে মার্চ এই তিনমাস কারও সাহিত্য অ্যাকাডেমি ঘোষণা না হওয়া নিয়ে কোনও জিজ্ঞাসা ছিল না। যোগ্য প্রাপকদের দীর্ঘ বঞ্চনাই এই উদাসীনতার অন্যতম কারণ বলে মনে করেন সাহিত্যিক। তাঁর কথায়, ‘অনেক যোগ্য ব্যক্তি এখনও পুরস্কার পাননি। একজন সিনিয়র লেখককেও জানুয়ারি নাগাদ জিজ্ঞেস করলাম। ঘটনাচক্রে তিনি এখনও সাহিত্য অ্যাকাডেমি পাননি। আমার কথা শুনে তিনি বললেন — কী? সাহিত্য অ্যাকাডেমি? ধুর, ছাড়ো তো! (কিছুক্ষণ থেমে) বোঝাই যাচ্ছে। সাহিত্য অ্যাকাডেমি কৌলিন্য হারিয়েছে। হারিয়েছে বলেই কেউ বিষয়টি নিয়ে ভাবিত নন। নয়তো জানুয়ারি মাসেই হইচই পড়ে যেত এই অপ্রাপ্তি নিয়ে।’