সেপসিস সংক্রমণের একটি বিপজ্জনক জটিলতা। বর্তমানে এটি ভারতে একটি বড় স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন বয়স গোষ্ঠীর মধ্যে এর প্রভাব আলাদা আলাদা। তাই এই সমস্যাটি নিয়ে সচেতনতা এবং বয়স অনুযায়ী প্রতিরোধ গড়ে তোলা দরকার। সম্প্রতি এই বিষয়েই বিশদে আলোচনা করলেন ফর্টিস হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিন কনসালট্যান্ট চিকিৎসক জয়দীপ ঘোষ।
আট থেকে আশি সকলেরই
আট থেকে আশি সকলেরই হতে পারে সেপসিস। কিন্তু সমস্যার প্রকৃতি ও সমাধান প্রত্যেকের ক্ষেত্রে আলাদা। একেকটি ক্ষেত্রে কেমন আকার নিতে পারে এই রোগ? সেই নিয়েই বিশদে আলোচনা করলেন চিকিৎসক জয়দীপ ঘোষ।
নবজাতক - নবজাতকদের মধ্যে এর ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। কারণ তাদের অপরিণত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও জন্মগত নানা জটিলতা। সংক্রমণ প্রসবের সময় মায়ের থেকে আসতে পারে বা হাসপাতালের কারণে হতে পারে। এর লক্ষণগুলো প্রায়শই সূক্ষ্ম হয়—যেমন খেতে অনীহা, আলস্য, শ্বাসকষ্ট বা দেহের তাপমাত্রার পরিবর্তন। এটি প্রতিরোধ করতে হলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন প্রসব পদ্ধতি, মায়ের সংক্রমণের স্ক্রিনিং, নবজাতকের ইউনিটে কঠোর নিয়ম পালন এবং ইমিউনিটি বাড়ানোর জন্য শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়ানো জরুরি।
প্রাপ্তবয়স্ক - তরুণ প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সেপসিস সাধারণত আঘাত, অস্ত্রোপচারের জটিলতা বা নিউমোনিয়া, ডেঙ্গু বা ম্যালেরিয়ার মতো গুরুতর সংক্রমণের পরে দেখা দেয়। যদিও তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী। তাই কখনও কখনও রোগ নির্ণয়ে দেরি হয়। একবার সেপসিস শুরু হলে রোগীর অবস্থা দ্রুত খারাপ হতে পারে। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে সংক্রমণের সময়মতো চিকিৎসা, টিকাকরণের নিয়ম মেনে চলা, নিরাপদ অস্ত্রোপচার পদ্ধতি অনুসরণ করা এবং পোকামাকড় দ্বারা বাহিত রোগ থেকে নিজেকে রক্ষা করা উচিত।
বয়স্ক নাগরিক - বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইমিউনিটি কমে যাওয়া এবং ডায়াবিটিস, কিডনি রোগ বা ফুসফুসের রোগের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগের কারণে বয়স্কদের সেপসিসের ঝুঁকি বেশি। বয়স্কদের মধ্যে সেপসিস প্রায়ই মূত্রনালীর সংক্রমণ, নিউমোনিয়া বা ত্বকের সংক্রমণের ফলে হয়। এর লক্ষণ জ্বরের পরিবর্তে বিভ্রান্তি, মাথা ঘোরা বা দুর্বলতা। প্রতিরোধের জন্য নিয়মিত টিকা নেওয়া, দীর্ঘস্থায়ী রোগগুলির জন্য নিয়মিত চেকআপ করানো।