দুর্গাপুজো মানেই সারা বাংলাজুড়ে নানা রকমের ঐতিহ্য। কোথাও মায়ের পুজোর রীতি আকর্ষণীয়, কোথাও আবার জাঁকজমকেই নজরকাড়া। প্রায় ৫০০ বছর আগে শুরু হওয়া দুর্গাপুজোতেই রয়েছে তেমনই আকর্ষণ। কথা হচ্ছে খড়দহের শ্রীপাটের দুর্গাপুজোর। এই পুজোয় নবপত্রিকাকে পরানো হয় সাদা থান। কেন? তার সঙ্গে জড়িয়ে আছে নদের নিমাইয়ের কাহিনি।
বিধবা বিবাহের কাহিনি
১৫৩০ সালে এই পুজো শুরু করেছিলেন প্রভু নিত্যানন্দ। তাঁর নির্দেশিত দেওয়া প্রথা মেনেই শুরু হয় দুর্গাপুজো। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বিধবা বিবাহের প্রচলন করেছিলেন ১৯ শতকে। কিন্তু খড়দহের পুজোয় বলা হয়, বিধবা বিবাহের প্রয়োজনীয়তা তখনই অনুভব করতে পেরেছিলেন নিত্যানন্দ। তাই সাদা থান পরানো হয় নবপত্রিকাকে। তবে এই সাদা থানের উপরে আঁকা হয়ে থাকে সিঁদুরের রেখা। বিধবা বিবাহের কথা বলা হয়ে থাকলেও অন্য একটি জনশ্রুতি প্রচলিত রয়েছে এই সাদা থান নিয়ে।
আরও পড়ুন - একাদশীতে বোধন! সিংহ নন, ব্যাঘ্রবাহিনী দেবীই বাংলার এখানে পূজিত হন ৫০০ বছর ধরে
জনশ্রুতি যা
স্থানীয়দের কথায়, নিত্যানন্দ দুর্গাপুজোর আয়োজন করবেন শুনে এলাকার সমস্তা বাসিন্দারা যে যাঁর সামর্থ্য অনুযায়ী নৈবেদ্য এনেছিলেন ভগবানের কাছে নিবেদন করতে। এক বৃদ্ধা তেমনই নিয়ে আসেন একটি সাদা থান। উপস্থিত সকলে তাতে অবাক হলেও ভক্তের নৈবেদ্য ফেরাননি নিত্যানন্দ। তিনি ওই থানই নবপত্রিকাকে পরিয়ে মন্ত্র উচ্চারণ করেন। সেই থেকেই এই রীতি।
আরও পড়ুন - নেপালি মন্ত্রে মা পূজিত হন কন্যা রূপে! উত্তরের এই পুজোয় ভিড় জমায় অজস্র ভক্ত
পুজোর ভোগও নজরকাড়া
এই পুজোয় পাঁঠার বদলে বলি দেওয়া হয় মাসকলাই। মা দুর্গার সঙ্গে এই পুজোয় লক্ষ্মী, সরস্বতীর বদলে উপস্থিত থাকেন তাঁর দুই সখী জয়া ও বিজয়াও। পুজোর ভোগও রীতিমতো নজর কাড়া। শুক্তো, মুগঘণ্ট, মোচার ঘণ্ট, পোস্ত, ডাল,ধোকার আর ছানার ডালনা, চাটনি, পরমান্নসহ চোদ্দরকম পদ দিয়ে মায়ের ভোগের আয়োজন করা হয়ে থাকে।