ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে হোক বা শপিংয়ের ফাঁকে, ফুচকা মুখে পোড়ে না, এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া দায়। ছোলা, ঘুঘনি দিয়ে মাখা আলু, একটু বেশি করে ঝাল আর মশলা দেওয়া, সঙ্গে টক জল-- মুখে গিয়ে যেন স্বর্গে নিয়ে যায়। আর এহেন ফুচকাই এবার ব্যবহার হল মণ্ডপ তৈরিতে। জানেন কি কোথায়?
বক্সে করে ঝোলানো রয়েছে ফুচকা। দেওয়ালে শালপাতা। টক জলের হাঁড়ি। এমনকী ঠাকুরও বসানো আছে বড় একটা ফুচকার মাঝে।
কোথায় করেছে এই প্যান্ডেল জানেন তো? আপনাকে যেতে হবে দক্ষিণ কলকাতায়। বেহালা নূতন দল ক্লাবের মাথা থেকে বের হয়েছে এই ইউনিক আইডিয়া। মণ্ডপের পরিকল্পনা ও রূপায়ন দিয়েছেন শিল্পী অয়ন সাহা। তিনি জানান, ‘ফুচকা স্ট্রিট ফুড হিসেবে পরিচিত। এটা আমার মাথায় অনেকদিন থেকেই ছিল। বাস্তবে রূপ দিতে একটু সময় লাগল। এর একটা ইতিহাসও আছে। দ্রৌপদী খুব একটা কঠোর সময়ে তৈরি করেন ফুচকাকে। পারিবারিক কাঠামো ও প্রতৃতির রূপকেও ফুচকার মধ্যে ধরতে পারা যায়। বাইরের রূপটা পৃথিবীর মতো। যত্নে রাখলে ভালো থাকবে, আর অযত্ন করলেই ভেঙে যাবে। একথা পরিবারের ক্ষেত্রেও প্রযোয্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরিবার বর্তমানে খুব ছোট হয়ে যাচ্ছে। সেই ভাবনা থেকেই আমার এই কাজ। একটু তুষ্টি থাকলেই, ধরে রাখা যায়। তুষ্টি একটা অভ্যেস। আর তাছাড়া ফুচকা ছাড়া বাঙালি অসম্পূর্ণ, বাঙালি দুর্গা পুজো ছাড়াও অসম্পূর্ণ। দুইয়ের মেলবন্ধনেই আমার ভাবনা।’
এত ফুচকা মিইয়ে যাচ্ছে না? অয়ন জানালেন, কিছু ফুচকাকে মেডিসিন ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়েছে। আর কিছু ফুচকায় ডিহাইড্রেট টেকনিক। যাতে জল ব্যাবহার করা কম হয় বলে নেতিয়ে কম যায়, দীর্ঘদিন তাজা থাকে।
ইতিমধ্যেই বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছে এই মণ্ডপ। পুজোর লম্বা লাইনও পড়ে গিয়েছে। দেখে নিন এক ঝলকে-
এই পুজো নিয়ে মজার মজার মন্তব্যও চোখে পড়ছে সোশ্যাল মিডিয়াতে। একজন লিখেছেন, ‘এখানে ঠাকুর দেখার পর সব্বাইকে অন্তত ফ্রি-তে একটা করে ফুচকা দেওয়া উচিত।’ অপরজন লিখলেন, ‘এই সেই ঠাকুর যেটা দেখেই সবার খিদে পেয়ে যাবে।’ তৃতীয়জন লিখলেন, ‘ভিতরে একটা ফুচকা ওয়ালা অন্তত রাখে হত। বেশ একটা ব্যাপার হত।’
চলতি বছরে তো মহালয়া থেকেই ঠাকুর দেখা শুরু করেছে আমজনতা। এবার যেন প্রতিপদ থেকেই হিড়িক লেখেছে মণ্ডপ দর্শনের। নূতন দলেও ভিড় কম হচ্ছে না।