Bankura News: দোলযাত্রা মানেই বাঙালির কাছে আরেক প্রাণের উৎসব। পলাশরাঙা বাংলায় বসন্ত কালের সবচেয়ে বড় উৎসব দোল উৎসব। দোল উৎসব রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন আঙ্গিকে উদযাপনের রীতি প্রচলিত রয়েছে। যেমন ধরা যাক, বাঁকুড়া জেলার জয়পুর থানার গোকুলনগর গ্রামে দোলযাত্রা উৎসব। গোকুলনগরের গোকুলচাঁদ মন্দির বহু পুরনো। তাই এই মন্দিরের বিগ্রহকে বিষ্ণুপুরের রাজবাড়ি মল্লরাজ বাড়িতে রাখা হয়। নিয়ম হল দোলের আগে বিগ্রহকে মন্দিরে নিয়ে আসা। এই বছরও তাই করা হয়েছে রীতি মেনে। মন্দিরে ফিরিয়ে আনা হয়েছে গোকুলচাঁদকে।
আরও পড়ুন - ক্যানসারের যন্ত্রণা নিয়েই উচ্চ মাধ্যমিক! মাতৃহারা সুজলির চোখে এখন একটাই স্বপ্ন
মল্লভূমের সবচেয়ে প্রাচীন বিগ্রহ
দেবোত্তর ট্রাস্টের মতে, বাঁকুড়া তথা মল্লভূমের সবচেয়ে প্রাচীন বিগ্রহ হল গোকুলচাঁদ। গোকুলনগরের এই মন্দিরে নিত্য পুজোপাঠ, সন্ধ্যারতি ও ভোগ নিবেদন করা হয়। কিন্তু মন্দিরে নিরাপত্তার অভাব যথেষ্ট। তাই প্রাচীন বিগ্রহ মন্দিরে রাখা হয় না। সারা বছর বিষ্ণুপুর মল্লরাজবাড়িতেই থাকেন গোকুলচাঁদ। দোলের আগে তাঁকে নিয়ে আসা হয় জয়পুরের মন্দিরে। মন্দিরে বিগ্রহ নিয়ে আসার সময় সঙ্গে থাকে পুলিশি প্রহরা।
দোল উৎসবের দিনগুলি মন্দিরেই
ট্রাস্টের বর্তমান সম্পাদক কালিশঙ্কর রায়ের কথায়, গ্রামবাসীদের দাবি মেনে বিগ্রহ মন্দিরে প্রবেশের আগে ষোলো আনা গ্রামের উদ্যোগে ভোগ নিবেদন করা হয়ে থাকে। প্রসঙ্গত, এটি বহু প্রাচীন রীতি। বর্তমানে দোল উৎসবের দিনগুলি মন্দিরে থাকেন গোকুলচাঁদ। দোল শেষ হয়ে গেলে আবার তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় মল্লরাজ বাড়িতে।
আরও পড়ুন - দেশ জুড়ে এবার কমতে পারে রেল দুর্ঘটনা! বিশেষ রোবট বানাল খড়গপুর IIT, কী কাজ করবে
পুলিশি নিরাপত্তার দাবি
বিগ্রহ রক্ষার জন্য পুলিশি নিরাপত্তার দাবি করছে ট্রাস্ট। ট্রাস্টের কথায়, পুলিশি নিরাপত্তা থাকলে বিগ্রহটি মন্দিরেই রাখা যায়। মন্দির থেকে মল্লরাজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু জয়পুরের গোকুলচাঁদ মন্দিরে এখনও পর্যন্ত কোনও পুলিশি নিরাপত্তা নেই। তাই সাহস করে মন্দিরেও বিগ্রহ রাখা যায় না। ট্রাস্ট সম্পাদক সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, যদি পুলিশি নিরাপত্তা মেলে, তাহলে বিগ্রহটি মন্দিরেই রাখা সম্ভব।
বৃহত্তম পঞ্চরত্ন মন্দির
প্রসঙ্গত, গোকুলচাঁদ মন্দির ল্যাটেরাইট পাথরে নির্মিত। এটি বাঁকুড়া জেলার বৃহত্তম পঞ্চরত্ন মন্দির। বিষ্ণুপুরকে বলা হয় গুপ্ত বৃন্দাবন। আর গোকুলনগরের মধ্যমণি হলেন গোকুলচাঁদ। গোকুলচাঁদ মন্দিরের চারপাশে বেশ প্রাচীন কয়েকটি শিব মন্দির রয়েছে। গোকুলনগর মৌজার উত্তর-পূর্ব দিকে যেমন রয়েছে গন্ধেশ্বর শিবের মন্দির। এখানেই রয়েছে বাঁকুড়া জেলার বৃহত্তম শিব লিঙ্গটি।