আজ যাঁরা বাংলার সিনেদুনিয়ার উজ্জ্বল মুখ একটা সময় তাঁদের প্রচন্ড স্ট্রাগলের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। রুদ্রনীল ঘোষ থেকে রাজ চক্রবর্তী, কাঞ্চন মল্লিক সকলেই আছেন এই তালিকায়। কী রকম ছিল তাঁদের সেই লড়াইয়ের সময়? এবার তা নিয়েই নানা কথা ভাগ করে নিলেন রুদ্রনীল। তিনি জানান, একবার নাকি তাঁকে একটি কুকুরের থেকেও কম টাকা পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: স্টেজ ৪ ক্যানসারে আক্রান্ত এই বাঙালি অভিনেত্রী! সম্প্রতি বাবাকে এই মারণ রোগেই হারিয়েছেন
'সঙ্গে সঙ্গীতা' নামে একটি পডকাস্টে রুদ্রনীল এই প্রসঙ্গে বলেন, 'প্রচুর স্ট্রাগল আছে। একটা সময় কাঞ্চন সেলুনে চুল কাটার কাজ করত। আমি মাছের ওষুধ বিক্রি করতাম। আমার প্রথম কলকাতা দেখা ওই কারণেই। তার আগে হাওড়া থেকে কাজ করতে আসতাম। সেই সময় দ্বিতীয় হুগলী সেতু, নবান্ন এই সব সবে তৈরি হয়েছে। তখন দ্বিতীয় হুগলী সেতু দিয়ে কেবল বড়লোকদের প্রাইভেট গাড়ি আসার অনুমতি ছিল। সেই সময় আমার ট্যাক্সিতে ওঠার টাকাও ছিল না।'
এরপর রুদ্রনীল জানান, একবার নাকি তাঁকে একটি কুকুরের থেকেও কম টাকা পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, আমি অভিনয় করে পেয়েছিলাম ১৫০ টাকা। আমার সঙ্গে তখন পোষ্যরাও কাজ করতে পারত। সেই সময় একটা অ্যালসেসিয়ান কুকুর আমার সঙ্গে কাজ করেছিল। তার মালিককে দেখি ৭০০ টাকা পারিশ্রমিক দেওয়া হচ্ছে। সেই সময় আমার সঙ্গে আর এক অভিনেতাও ছিলেন তিনি আমাকে বলেছিলেন, 'আমরা কি কুকুরের অধম? দেখ কুকুরের পেমেন্ট বেশি।' হ্যাঁ, কষ্ট হত। এটা নিয়ম। তারপর ভাঙতে হয়েছে। তারপর ইন্ডাস্ট্রির নিয়ম ছিল ফর্সা না হলে অভিনেতা নয়। ফর্সা এবং লম্বা হলে দারুণ অভিনেতা।'
আরও পড়ুন: হ্যাঁ, নিখিলকে বিয়ে করেছি, 'সহবাস' বিবৃতির বিতর্ক উসকে যা বললেন নুসরত!
এরপর তিনি রাজ চক্রবর্তীর কথাও ভাগ করে নেন। অভিনেতা বলেন, 'কোনও শ্যুটিং থেকে বিস্কুটের প্যাকেট দেওয়া হলে খেতাম না। বাড়ি নিয়ে আসতাম। যাতে খিদে পেলে ভাগ করে খেতে পারি। রাজ এসেছিল অভিনেতা হতে। তারপর ধীরে ধীরে পরিচালনার প্রতি টান তৈরি হয়। তারপর কাজ শেখে, তারপর আজকের সফল রাজ চক্রবর্তী হয়ে উঠেছে ঈশ্বরের আশীর্বাদে মানুষের ভালোবাসায়। কিন্তু আমাদের লড়াইয়ের সময় আমরা ঘুম থেকে উঠতাম সাড়ে ১১টার সময়। সকালে ঘুম থেকে উঠলে জলখাবার, তারপর দুপুরের খাবারের খরচ। যদি সাড়ে ১১টায় ঘুম থেকে উঠি তাহলে দুটো খাবার বেঁচে গিয়ে একটা খাবার হয়ে যাবে। কারণ পয়সা নেই। আমি আর রাজ আসলে একটা থালাতেই ভাত খেতাম। আমরা একথালার বন্ধু।'