গ্রেটার নয়ডায় পণের দাবিতে বধূহত্যা কাণ্ডে পরপর উঠে আসছে নতুন সব তথ্য। গত ২১ আগস্ট ২৮ বছরের নিকি ভাটিকে পণের দাবিতে শ্বশুরবাড়ির লোকজন আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠলেও, পুলিশের হাতে আসা হাসপাতালের মেমো এবং নিক্কির শেষ বক্তব্যে উঠে এসেছে ভিন্ন দাবি।আর যার জেরে ক্রমশ গভীর হচ্ছে রহস্য।
নিকি ভাটির গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের দাবি
সূত্রের খবর, চিকিৎসকদের কাছে নিকি নিজেই নাকি বলেছিলেন, রান্না করার সময় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে তাঁর শরীরে আগুন লেগেছে। সেই বক্তব্য মেদিকো, লিগ্যাল সার্টিফিকেটে (এমএলসি নম্বর ৭০৩) নথিভুক্ত হয়। সন্ধ্যা ছ’টার সময় গুরুতর অবস্থায় স্বামী বিপিন ভাটির আত্মীয় দেবেন্দ্র তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে পুলিশি তদন্তে পরে জানা যায়, সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কোনও প্রমাণ মেলেনি। বরং বাড়ি থেকে একটি ফাঁকা থিনারের বোতল এবং লাইটার উদ্ধার হয়, যা এখন মূল প্রমাণ হিসেবে ফরেনসিকে পাঠানো হয়েছে। কাসনা থানার এসএইচও ধর্মেন্দ্র শুক্ল জানান, নিক্কি ইচ্ছে করেই হয়তো সত্য গোপন করেছিলেন। কারণ, তিনি বোন কাঞ্চনের বিয়েও একই পরিবারে হওয়ায়, শ্বশুরবাড়ির কাউকে ফাঁসাতে চাননি। তবে পুলিশি তদন্তে নিশ্চিত হয়েছে যে কোনও সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়নি।
অন্যদিকে, প্রথমে পরিবারের পক্ষ থেকে নিকির ময়নাতদন্তে সম্মতি দেওয়া হয়নি। পরে পুলিশের অনুরোধে রাজি হন তাঁরা। হিন্দুস্তান টাইমসকে নিকির ভাই ভিকি পৈলা জানিয়েছেন, 'মৃতদেহের উপর কাটাছেঁড়া এড়াতে আমরা প্রথমে ময়নাতদন্তে রাজি হয়নি।' এসএইচও ধর্মেন্দ্র শুক্ল জানান, আলোচনার পর নিকির ময়নাতদন্তে সম্মতি জানায় পরিবারের সদস্যরা। এদিকে কাঞ্চন পুলিশের কাছে জানিয়েছেন, তিনি নিজে দৌড়ে গিয়ে দেখেন, দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে নিকির শরীরে। বিপিন তখন সামনেই দাঁড়িয়ে ছিল। তিনি এক হাতে জল ছিটিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন, অন্য হাতে মোবাইলে রেকর্ডিং করেন। তিনি ঘটনার কিছু অংশ রেকর্ডও করেছিলেন। এর কিছুক্ষণ পরেই তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন এবং নিকিকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।সেই ভিডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।তবে ঘটনার গুরুতর দিক সত্ত্বেও পরিবারের তরফে প্রথমে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। শেষকৃত্যের প্রায় ২০ ঘণ্টা পরে অভিযোগ দায়ের হয়। এরপরই বিপিন ভাটি ও তাঁর বাবা, মা এবং ভাই রোহিতকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে নিকি ও কাঞ্চন ভাটি পরিবারের দুই ভাই বিপিন ও রোহিতকে বিয়ে করেছিলেন। দুই বোনের জীবনই তখন থেকে অন্ধকারের পথে গিয়েছে বলে অভিযোগ। বর্তমানে গোটা ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে এই নারকীয় ঘটনাকে ঘিরে।