বিয়ের পর দ্বিতীয়, আর হবু মা হিসাব পিয়া চক্রবর্তীর এটাই প্রথম নববর্ষ। পয়লা বৈশাখ প্রতিটি বাঙালির কাছেই বিশেষ। পিয়ার কাছেও তাই। নববর্ষ নিয়ে পুরনো কিছু স্মৃতি সহ মাতৃত্ব নিয়ে অনুভূতির কথা আনন্দবাজারে লেখা নিজের কলমে সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন পিয়া চক্রবর্তী।
পিয়ার কাছে ছোটবেলার নববর্ষ মানেই স্কুলের অনুষ্ঠান। তাঁর কাছে সেই স্মৃতি এখনও তাজা। আর তাঁর কাছে স্কুলে নববর্ষ মানেই ‘এসো হে বৈশাখ’ গানের সঙ্গে লাল পাড় শাড়ি পরে লোডশেডিং-এর মধ্যেও গরমে সেদ্ধ হতে হতে ২৫ বৈশাখের অনুষ্ঠানের জন্য মহড়া দেওয়া। স্বীকার করতে অস্বস্তি হলেও পিয়া জানান, স্কুল শেষ হওয়ার পর তিনি আর ঘটা করে তেমন নববর্ষ পালিত করেননি। ইংরাজি নববর্ষের দাপটে বাঙালির পয়লা বৈশাখের স্মৃতি বর্তমানে অনেকটাই ম্লান।
তবে পিয়া চক্রবর্তী জানান, তিনি উৎসব ও উদযাপনে ভীষণভাবেই বিশ্বাসী। উপহার দিতেও তাঁর ভালো লাগে। যদিও এবার তাঁর কাছে নববর্ষ অনেকটাই অন্যরকম, সেকথা অস্বীকার করেননি তিনি। কারণ, তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে বড় একটা পরিবর্তন হতে চলেছে। আগামী জুনেই মা হতে চলেছেন পিয়া। এই মাতৃত্ব বিষয়টা যে তাঁর কছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, সেকথাও জানিয়েছেন তিনি।
তাঁর কথায়, ‘প্রত্যেক মা নিজের মতো করে অনন্য। মাতৃত্বের অনুভূতি, সংজ্ঞা, দৃষ্টান্ত আসলে অনেক রকমের। মাতৃত্ব অবশ্যই একটা চয়েস হওয়া উচিত, এই মতে আমি চিরকাল বিশ্বাসী। আমি জীবনের অনেকটা কাটিয়ে এসে তবেই এই সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছি। নিজেকে মানসিক ভাবে পরিণত মনে হয়েছে, প্রস্তুত মনে হয়েছে। যদি তা না মনে হত, তা হলে বিরত থাকতাম।’
আরও পড়ুন-'আমি ও পিয়া দুজনেই বাড়ি থাকতে ভালোবাসি, তাই…', পয়লা বৈশাখ কীভাবে কাটবে হবু বাবা পরমব্রতর?
তবে মাতৃত্বকে যতটাই গৌরবান্বিত করা হয়, মা না হওয়ার সিদ্ধান্তকে ভীষণভাবে হেয় করা হয়। এই সবই পুরুষতান্ত্রিক সমাজের পরিকাঠামোর কারণেই বলে মনে করেন পিয়া। তাঁর কথায়, আমাদের এই সমাজে মা না হতে চাওয়া মহিলা মানেই তিনি স্বার্থপর, আত্মকেন্দ্রিক এমনটা ভাবা হয়। আবার মা হলেও সঠিক মা বেঠিক মা খুঁজে বের করা হয়। এমন বস্তাপচা ধারণার ঘোর বিরোধী পিয়া চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, ‘মা হওয়ার মতো, মা না হওয়ার সিদ্ধান্তকেও সম্মান করুন। শুধু সম্মান কেন, উদ্যাপন করুন।’