রাজ্য সরকার বিধি মেনে শ্যুটিংয়ে ছাড়পত্র দিলেও জট অব্যাহত। এবিষয়ে এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ চাইল আর্টিস্ট ফোরাম, প্রোডিউসারস গিল্ড ও চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী, বুধবার থেকেই ৫০ শতাংশ সদস্য নিয়ে কাজ শুরুতে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। এদিন সেই মতো শুরু হয় কাজ।
করোনা বিধি মেনে ৫০ জন সদস্যকে নিয়ে শ্যুটিং করা যাবে, এ কথা সোমবার নবান্নে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তা সত্ত্বেও আজ টলিগঞ্জের বেশিরভাগ স্টুডিওতেই আলো জ্বলল না। গতকালই স্টুডিওর তালা খুলে ছিল, প্রযোজকদের তরফে স্যানিটাইজেশনের কাজও করা হয়েছিল। তবে তবুও ‘শ্রীময়ী’, ‘মিঠাই’দের শ্যুটিং বিশ বাঁও জলে। এর জন্য ফেডারশনেই কাঠগড়ায় তুলল আর্টিস্ট ফোরাম ও ওয়েলফেয়ার অ্যাসোশিয়েশন অফ টেলিভিশন প্রোডিসার্স।
এদিন শ্যুটিং ফ্লোরে হাজির ছিলেন ফেডারেশনের অন্তর্গত গিল্ডের টেকনিশিয়ানরা। এর জেরেই বিঘ্ন দেখা যায় শ্যুটিংয়ে। এই নিয়ে আজ সন্ধ্যায় এক সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন করে আর্টিস্ট ফোরাম। হাজির ছিলেন প্রোডিউসারস গিল্ডের তরফে শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়, লীনা গঙ্গোপাধ্যায়, সানি ঘোষ রায়, অশোক ধানুকারা। অন্যদিকে আর্টিস্ট ফোরামের তরফে উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছেন শান্তিলাল মুখোপাধ্যায় এবং শঙ্কর চক্রবর্তী।
লীনা গঙ্গোপাধ্যায় হতাশার সুরে জানান, ‘চেয়েছিলাম একসঙ্গে কাজ করি… দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে, জানি না শ্যুটিং করতে পারব কিনা’। প্রযোজক, আর্টিস্ট ফোরামের তরফে জানানো হয় টেকনিশিয়ানদের প্রছন্ন হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
টেকনিশিয়ানদের অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “টেকনিশিয়ানরা আসছে না। যারা আসছেন তাঁরাও উধাও হয়ে যাচ্ছেন।" লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, “হেল্পলেস মনে হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী চেয়েছিলেন একসঙ্গে কাজ করি…দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। জানি না শুটিং করতে পারব কিনা?
গোটা ঘটনার সূত্রপাত শ্যুট ফ্রম হোমকে ঘিরে। করোনা বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করে বাড়ির বাইরেও শ্যুটিং করেছেন শিল্পীরা, পাশাপাশি পেশাদারদের দিয়েও কাজ করানো হচ্ছে অথচ সেই ব্যাপারে কিচ্ছুটি টের পাচ্ছেন না টেকনিশিয়ানরা। এইরকম নানাবিধ অভিযোগ রয়েছে ফেডারেশনের। আর্টিস্ট ফোরামের তরফে তার জবাব না পেলে ‘অসহযোগিতা’র কথা জানিয়েছিল ফেডারেশন, এবার খাতায়-কলমে তা করে দেখাল।
লকডাউনের মধ্যে শ্যুট ফ্রম হোমের রীতিও লঙ্ঘন করে যে ২০টি ধারাবাহিক শ্যুটিং চালিয়েছে বলে অভিযোগ, তাদের বিরুদ্ধে গতকাল (মঙ্গলবার) ফেডারেশনের নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। উল্লিখিত ধারাবাহিকে ফেডারেশনের কোনও সদস্য কাজ করতে পারবেন না। ফেডারেশনের নির্দেশ, প্রোডিউসার গিল্ডের সঙ্গে ফেডারেশনের নতুন করে চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে বলে জানা গেছে।

এদিন আর্টিস্ট ফোরাম সাফ জানায়, ‘বিভেদকামী শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছি, এবং সমস্ত শিল্পী ও কলাকুশলীদের স্বার্থে দাবি রাখছি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে স্বাভাবিক নিয়মে পুনরায় শ্যুটিং প্রক্রিয়াকে চালনা করার ভাবনা’।
মুখ্যমন্ত্রীর কোর্টে বল ঠেলে দিয়েছে আর্টিস্ট ফোরাম, এখন দেখবার এই বিতর্কের জল কতদূর গড়ায়।