বর্ষীয়ান চিত্রনাট্যকর এবং গীতিকার জাভেদ আখতার, দেশের বাকি নাগরিকের মতোই ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসে সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি হৃদয়গ্রাহী পোস্ট করেন। তবে সেই পোস্টেই রীতিমতো কটাক্ষে পড়তে হয় তাঁকে। একজন আবার কটাক্ষ করে লেখে যে, তিনি একজন পাকিস্তানি নাগরিক এবং পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস পালন করা উচিত তাঁর। এমনকী, কমেন্টে তাঁকে বিশ্বাসঘাতকও বলা হয়।
তবে চুপ থাকেননি গীতিকার জাভেদ আখতার, বরং কড়া জবাব দিয়েছেন। জাভেদ আখতার তাঁর ন্যাশনালিটি নিয়ে প্রশ্ন তোলা ট্রোলে পাল্টা আঘাত করেন। শুক্রবার, জাভেদ এক্স (আগের টুইটার)-এ লেখেন, ‘আমার সকল ভারতীয় ভাই ও বোনেদের স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা। আসুন আমরা ভুলে না যাই যে, এই স্বাধীনতা আমাদের থালায় করে দেওয়া হয়নি। আজ আমরা তাদের স্মরণ করি এবং সালাম জানাই যারা আমাদের জন্য স্বাধীনতা আনতে কারাগারে গিয়েছিলেন এবং ফাঁসি কাঠে ঝুলেছিলেন। আসুন আমরা দেখি যেন এই মূল্যবান উপহারটি আমরা কখনও না হারাই।’
এই পোস্টে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে একজন ট্রোলার মন্তব্য করেন, ‘আপনার স্বাধীনতা দিবস তো ১৪ অগস্ট’। জাভেদ অবশ্য মোটেও অদেখা করেননি সেই কটাক্ষভরা মন্তব্য। বরং জবাব দেন, ‘বাচ্চা, তোমার বাবা-দাদা যখন ইংরেজদের জুতোর তলা চাটছিল, আমার পূর্বপুরুষরা দেশের স্বাধীনতার জন্য কালাপানিতে মরছিল। বুঝেশুনে কথা বলো।’
কালাপানি বলতে আন্দামানের সেলুলার জেলকে বোঝায়, যেখানে ব্রিটিশ শাসনকালে অনেক রাজনৈতিক বন্দীকে পাঠানো হত।
প্রসঙ্গত, জাভেদ আখতারের পরিবার স্বাধীনতা সংগ্রামের অংশীদার ছিলেন। জাভেদ আখতারের প্রপিতামহ ফজল-এ-হক খায়রাবাদী ছিলেন একজন ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী, যিনি ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁর কাকা আনসার হারভানি, ছিলেন একজন রাজনীতিবিদ এবং স্বাধীনতা সংগ্রামী, যিনি ভারতের বিভক্তির বিরোধিতা করেছিলেন।
জাভেদ আখতারকে একজন ব্যক্তি গদ্দার (বিশ্বাসঘাতক) বলায় তিনি জবাব দেন, ‘বিশ্বাসঘাতক তারা যারা অসহযোগ আন্দোলন এবং ভারত ছাড়ো আন্দোলনের বিরুদ্ধে ছিল। বিশ্বাসঘাতক তারা যারা যতটা সম্ভব ইংরেজদের সাহায্য করেছিল। বিশ্বাসঘাতক তারা যারা আমাদের সংবিধান এবং আমাদের ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকার বিরুদ্ধে ছিল। খুঁজে বের করো তারা কারা ছিল, এবং নিজের অজ্ঞতা কিছুটা কমিয়ে নাও’।