সোমবার সকালে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা তথা রাজনীতিবিদ জয় বন্দ্যোপাধ্য়ায়। বেশ কয়েকদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। সম্প্রতি শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। বয়স হয়েছিল ৬২। তাঁর এই মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে তাঁর পরিবার, সঙ্গে মন খারাপ প্রাক্তন স্ত্রী অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
আনন্দবাজার ডট কমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই প্রসঙ্গ মুখ খুলেছেন অভিনেত্রী তথা শাসকদলের কাউন্সিলর। তিনি বলেন, ‘১৫ অগস্ট থেকে ও হাসপাতালে। সে দিন থেকে আমিও কাজের ফাঁকে ফাঁকে হাসপাতালে গিয়েছি। ওর মা ও বাড়ির বাকিদের যা প্রয়োজন হয়েছে, পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। অনেক দিন ধরে অসুস্থ। ইদানীং অল্প কথা বললেই হাঁপিয়ে যেত। তবু ভেবেছিলাম, ফিরে আসবে। অদম্য প্রাণশক্তি ছিল তো।’
এরপর অভিনেত্রী নেতা বা অভিনেতা নয় বরং স্বামী জয়ের কথা বলেন। তাঁর কথায়, ‘ভেসে গিয়েছিলাম জয়ের প্রেমে। আমার কলেজবেলার ‘ক্রাশ’ ছিল ও। ভীষণ রঙিন জীবন। নিজের শর্তে বরাবর বাঁচতে পছন্দ করা এক স্বাধীনচেতা মানুষ। বড়লোক ব্যবসায়ী ঘরের ছেলে। তার পরেও মাটিতে পা তাঁর। মা-বাবাকে কী যে ভালবাসত! পূর্ণবয়স্ক এক পুরুষ ছেলেমানুষের মতো মা-বাবাকে আঁকড়ে থাকত। তার উপরে নিজেকে নিয়ে একেবারেই সচেতন ছিল না। অঙ্ক কষে বাঁচেনি জয়। কিন্তু ভীষণ ভালো কথা বলতে পারত। যে কোনও মানুষকে কথার জালে বন্দি করতে পারত। আমাকেও হয়তো এ ভাবেই বন্দি করেছিল।'
প্রসঙ্গত, জয়কে ভালোবেসে তাঁর সঙ্গে ঘর বেঁধে ছিলেন অনন্যা। কিন্তু নানা কারণে সেই সম্পর্ক ভাঙে। অনেকে অনুমান করেন রাজনীতিও নাকি কিছুতা দায়ী। তারপর আরও দ্বিতীয়বার বিয়ের পিঁড়িতে বসেনি অভিনেত্রী। রাজনীতি আর অভিনয়েই মন দিয়েছেন। নায়িকার কথায়, ‘কাজের প্রচণ্ড চাপ। তার উপরে সম্পর্কের বাঁধনে জড়ানো মানে ‘প্রতিশ্রুতি’র দায়বদ্ধতা। আজ জয়ের মৃত্যুসংবাদ শুনে মনে হচ্ছে, কোথাও বুঝি জয়ও জড়িয়ে ছিল। কোনও মেয়ের জীবনের প্রথম পুরুষ, প্রথম প্রেম— থেকেই যায়।’
কাজের সূত্রে, অনন্যাকে সিরিজ, ছবি, মেগা সব মাধ্যমেই কাজ করেছেন। সম্প্রতি সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের আসন্ন ছবি 'লহ গৌরাঙ্গের নাম রে…'-এর কাজ শেষ করেছেন। তাছাড়াও বর্তমানে তাঁকে লক্ষ্মী ঝাঁপি ধারাবাহিকের নায়ক দীপের হবু শ্বাশুড়ি তথা 'ইনকা'র মা 'কাজরী'র ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে।