আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষদের মাছচাষে যুক্ত করতে নয়া কর্মসূচি শুরু করল রাজ্য সরকার। দশ হাজার টাকা থেকে শুরু করে এক কোটি টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকল্পে থাকছে বিপুল ভর্তুকি। সাইকেল, বাইক বা টোটোতে মাছ বিক্রি হোক কিংবা কিয়স্ক, হিমঘর বা মাছের খাবার তৈরির কারখানা, সব ক্ষেত্রেই প্রকল্প খরচের ৯০ শতাংশ দেবে সরকার। উপভোক্তাদের দিতে হবে মাত্র ১০ শতাংশ টাকা।
আরও পড়ুন: আর আবেদন-নিবেদন নয়, সমুদ্র সাথীর টাকা না পেয়ে মাইকে প্রচার শুরু জেলে পাড়ায়!
এই উদ্যোগকে ঘিরে জলপাইগুড়ি জেলায় জোর প্রচার শুরু করেছে মৎস্য দফতর। মেটেলি, মালবাজার, নাগরাকাটা, বানারহাটের মতো আদিবাসী অধ্যুষিত ব্লকগুলিতে চলছে মাইকিং ও লিফলেট বিলি। পঞ্চায়েত, দুয়ারে সরকার শিবির বা পাড়ায় সমাধান শিবিরের মাধ্যমে মানুষকে প্রকল্পের সুবিধা বোঝানোর চেষ্টা চলছে।
জেলা মৎস্য অধিকর্তা রমেশচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আদিবাসীদের মাছচাষে যুক্ত করতে একাধিক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। মাত্র দশ শতাংশ খরচ করতে হবে উপভোক্তাদের। বাকি টাকা দেবে সরকার। জেলা মৎস্য আধিকারিক অমিত সরকার জানিয়েছেন, ব্লক ও জেলা পরিষদের মাধ্যমে উপভোক্তা চিহ্নিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মৎস্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সাইকেলে মাছ বিক্রির জন্য ১০ হাজার টাকার প্রকল্প, বাইকে ৭৫ হাজার, টোটোতে ৩ লক্ষ, গাড়িতে মাছ বিক্রির জন্য ২০ লক্ষ টাকার প্রকল্প রয়েছে। মাছের খাবার তৈরির ইউনিট করতে ৩০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সহায়তা দেওয়া হবে। মাছ সংরক্ষণের জন্য হিমঘর তৈরিতে ৪০ লক্ষ থেকে এক কোটি টাকার প্রকল্প রয়েছে। পাশাপাশি, ২৫ লক্ষ টাকায় হ্যাচারি, ৩ থেকে ৮ লক্ষ টাকায় রঙিন মাছ চাষ, আর ড্রাম বা পুকুরে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছচাষের জন্য ৮ থেকে ২৫ লক্ষ টাকার প্রকল্প রাখা হয়েছে।
তবে ভর্তুকির হার সব সম্প্রদায়ের জন্য সমান নয়। আদিবাসীদের জন্য যেখানে প্রকল্প খরচের ৯০ শতাংশ বহন করছে সরকার, সেখানে অন্যান্য সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রে সেই ভর্তুকি মিলবে ৬০ শতাংশ। তবুও এখনও পর্যন্ত আদিবাসীদের তরফে খুব বেশি আবেদন আসেনি। বরং অন্য সম্প্রদায়ের উপভোক্তারা আগ্রহ দেখাচ্ছেন বেশি। সহ মৎস্য অধিকর্তার দাবি, গত তিন বছরে জলপাইগুড়ি জেলায় বঙ্গ মৎস্য যোজনায় প্রায় ৮০টি প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে। সরকারি ভর্তুকি হিসেবে দেওয়া হয়েছে প্রায় ৪ কোটি টাকা। নতুন উদ্যোগের ফলে এবার আদিবাসী পরিবারগুলিও মাছচাষের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিকল্প জীবিকা গড়ার সুযোগ পাবে বলে আশা করছে প্রশাসন।