ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। যে কারণে নিরাপত্তা নিয়েও তৈরি হয়েছে উদ্বেগ। এর মধ্যে কি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ আদৌ আয়োজন করা কঠিন হয়ে উঠেছিল। যে কারণে আইপিএল স্থগিত করে দিতে হল।
স্থগিত হয়ে গেল আইপিএল
পিটিআই-এর খবর অনুসারে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধির পর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কারণে আইপিএল স্থগিত করা হয়েছে। ধরমশালায় পঞ্জাব কিংস বনাম দিল্লি ক্যাপিটালসের ম্যাচটি নিরাপত্তাজনিত কারণে বাতিল হওয়ার পরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে বৃহস্পতিবার ধরমশালায় মাঝপথে বন্ধ করে দিতে হয় পঞ্জাব কিংস বনাম দিল্লি ক্যাপিটালসের আইপিএল ম্যাচ। জম্মুতে পাকিস্তানের হামলার পরেই নিরাপত্তার কারণে আর কোনও ঝুঁকি নেওয়া হয়নি। সে কারণেই টুর্নামেন্টই স্থগিত করে দিতে হল।
পিটিআই-কে আইপিএল চেয়ারম্যান অরুণ ধুমাল পিবিকেএস-ডিসি খেলা বাতিল হওয়ার পরেই বলেছিলেন, ‘আমরা এখন পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছি। এটি একটি ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি। আমরা এখনও সরকারের কাছ থেকে কোনও নির্দেশনা পাইনি। স্পষ্টতই সমস্তটা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
তখন থেকেই সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। এর মাঝেই নিরাপত্তা নিয়ে চাপানউতোর তৈরি হওয়ার পর বিদেশি খেলোয়াড়রাও যে যাঁর দেশে ফিরে যেতে চাইছেন। এই পরিস্থিতিতে বিসিসিআই কঠিন সিদ্ধান্তটি নিয়েই ফেলল।
ফের কবে অনুষ্ঠিত হতে পারে টুর্নামেন্ট?
আইপিএল ২০২৫-এ এখন পর্যন্ত ৫৭টি ম্যাচ খেলা হয়েছে। যেখানে এই মরসুমে ৭৪টি ম্যাচ খেলার কথা রয়েছে। তার মানে এখনও ১৬টি ম্যাচ বাকি আছে। এখন প্রশ্ন হল, এই ম্যাচগুলি কবে অনুষ্ঠিত হবে? পুরো আইপিএল শেষ করতে প্রায় দুই সপ্তাহ সময় লাগবে। এমন পরিস্থিতিতে, বিসিসিআই-কে একটি নতুন উইন্ডো খুলতে হবে। প্রসঙ্গত, আইপিএলের পরে ভারতীয় দলের ঠাঁসা ক্রীড়াসূচি রয়েছে। জুন মাসে টিম ইন্ডিয়া ইংল্যান্ড সফর করছে। সেখানে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে ভারত। এই সিরিজটি অগস্ট পর্যন্ত চলবে। এর পর টিম ইন্ডিয়াকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলতে হবে। তবে সেই সিরিজটি হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ বাংলাদেশের সঙ্গেও ভারতের উত্তেজনা চরমে। যদি ভারত-বাংলাদেশ সিরিজ না হয় এবং এশিয়া কাপে ভারত অংশগ্রহণ না করে, তাহলে এর মধ্যে তারা আইপিএলের বাকি ম্যাচগুলি আয়োজন করতে পারে, তবে অন্যান্য দলগুলি এই সময়ে অন্যান্য সিরিজে ব্যস্ত থাকবে। এখানে উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ যে, অন্যান্য দেশের বোর্ডগুলিও আইপিএল চলাকালীন তাদের কোনও সিরিজ আয়োজন করে না।
আইপিএলের জন্য নতুন উইন্ডোর খুঁজে পাওয়া দুষ্কর
অগস্ট থেকে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের দলগুলি ক্রিকেটে ব্যস্ত থাকবে। সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ইংল্যান্ডের মধ্যে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এই সময়ের মধ্যে ভারতকে এশিয়া কাপ খেলতে হবে, কিন্তু এখন টুর্নামেন্টটি অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এর পাশাপাশি ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে একটি সিরিজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, আইপিএলের জন্য একটি উইন্ডো খুঁজে বের করা বিসিসিআইয়ের জন্য একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ হবে।
কোভিডের সময়েও বন্ধ হয়েছিল আইপিএল
২০২১ সালে করোনা সংক্রমণের জেরে বিসিসিআই আইপিএল অনির্দিষ্টকালের জন্য বাতিল করে দিতে বাধ্য হয়েছিল। আসলে বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজির খেলোয়াড় এবং সাপোর্ট স্টাফেরা একের পর এক করোনা আক্রান্ত হচ্ছিলেন। বায়ো-বাবল ভেঙেই কোভিড হানা দিয়েছিল আইপিএল ২০২১-এ।