রবিবারই দীর্ঘ ক্রিকেট ক্যারিয়ানে ইতি টেনেছেন মনোজ তিওয়ারি। রবিবাসরীয় সন্ধ্যের সময়ে সিএবি-র রাজকীয় সংবর্ধনায় একাধিক স্মৃতি ভাগ করে নিয়েছেন মনোজ তিওয়ারি। তবে মনের কোণে এখনও রয়েছে না পাওয়ার কিছু যন্ত্রণা, কিছু দুঃখ, আফসোস, হাহুতাশ, আবার কোনও কোনও বিষয়ে তীব্র ক্ষোভ।
আরও পড়ুন: প্রতিদিন ৫০০ করে বল খেলেছেন, স্পিনের বিরুদ্ধে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে ১৬০০ কিমি সফর করেছেন সরফরাজ
সোমবার কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসেছিলেন মনোজ তিওয়ারি। ক্রিকেটারদের উদ্দেশ্যে বোর্ড সচিব জয় শাহ যে ই-মেল পাঠিয়েছেন, সেই প্রসঙ্গ ওঠে সেখানে। মনোজ বলেন, ‘রঞ্জি ট্রফির মূল্যটা এখন কমে যাচ্ছে। কিছু বললেই নির্বাসিত করবে, জরিমানা করবে। এখন বোর্ড খেলোয়াড়েরা চালাচ্ছে না। চালাচ্ছে কিছু রাজনীতির লোকজন। এটাই বাস্তব। কিছু বললেই নির্বাসিত হতে হবে। একটা টুইটের জন্য আমার ২০ শতাংশ ম্যাচ ফি জরিমানা করা হয়েছে। আগে মুখ খুললে এই সংবর্ধনার দিনটা আমার দেখা হত না। হয়তো ক্রিকেট জীবন আগেই শেষ হয়ে যেত। রঞ্জি ট্রফি শেষ হলে আরও অনেক কিছু বলতে পারি। রঞ্জি ট্রফির যে গুরুত্ব সেটাকে তুলে ধরার চেষ্টা করব।’ সম্ভবত মনোজের ইঙ্গিত বোর্ড সচিব জয় শাহের দিকে। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা শাসকদল বিজেপির নেতা অমিত শাহের ছেলে জয় শাহ। তাঁর নির্দেশেই চলছে বোর্ড।
আরও পড়ুন: অকারণেই আইপিএল থেকে নাম প্রত্যাহার অ্যাটকিনসনের, চাপ না নিয়ে আগেভাগেই বদলি ঠিক করে ফেলল KKR
এখানে না থেমে মনোজ আরও যোগ করেন, ‘বোর্ড এই নির্দেশ জারি করার পর ঘরে বসে ভাবছিলাম, আমি টুইট না করলে বোধহয় এটা হত না। বোর্ড এখন এটাকে এত গুরুত্ব দিচ্ছে। আমি কিন্তু অনেক দিন ধরেই বলছিলাম এই বিষয়ে। যারা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে কম ম্যাচ খেলেছে কিন্তু আইপিএল খেলে বিখ্যাত হয়েছে, তারা এখন শুধু আইপিএলকেই গুরুত্ব দিচ্ছে। আইপিএল শুরু হওয়ার পর থেকেই আমি এই প্রবণতা লক্ষ্য করেছি। তরুণ ক্রিকেটারেরা দেখতাম শুধু আইপিএল নিয়েই আলোচনা করছে। রঞ্জি ট্রফি চলার সময়ে বিশেষ করে হয় এটা। কারা করে সেটা এখন সবাই জানে।’ ঠিক ৯ দিন আগে একটি টুইট করেছিলেন তিনি। রঞ্জি ট্রফির গুরুত্ব কী ভাবে কমছে এবং কী ভাবে এই প্রতিযোগিতা জৌলুস হারাচ্ছে, তা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন।
ইংল্যান্ড ব্যাজবল ক্রিকেট ল্যাজেগোবরে হওয়া নিয়েও প্রসঙ্গ উঠেছিল। মনোজ দাবি করেন, ‘ব্যাজবল দৃষ্টিভঙ্গি আমার পছন্দ নয়। কারণ, ইংল্যান্ড শুধু জয় বা হার নিয়ে ভাবে। কিন্তু ম্যাচ বাঁচানোর মতো একটা ব্যাপারও রয়েছে। দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে নামলে যদি দেখা যায়, ম্যাচ হারা বা বাঁচানো ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই, তখনও আগ্রাসী ক্রিকেট খেলার অর্থ নেই। এই কারণেই ভারতের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে হারের জায়গায় চলে গিয়েছে ওরা। রঞ্জিতেও অনেক তরুণ ক্রিকেটারকে দেখেছি ম্যাচের পরিস্থিতির কথা ভাবছে না। সবাই আইপিএলের কথা মাথায় রেখে প্রথম থেকেই চালিয়ে খেলছে।’