ডেঙ্গি দমন অভিযানের মধ্যেই চাঞ্চল্যকর ঘটনা হাওড়ায়। এলাকায় ডেঙ্গি মশার লার্ভা আছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে গিয়ে অ্যাসিড হামলার শিকার হলেন এক মহিলা গ্রামীণ সম্পদ কর্মী (ভিআরপি)। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ সাঁকরাইল গ্রাম পঞ্চায়েতের বড়বাগান মান্নাপাড়া এলাকায়। অভিযোগ, স্থানীয় বাসিন্দা বিপ্লব মান্না আচমকা বোতলভর্তি অ্যাসিড ছুঁড়ে দেন ওই কর্মীর শরীরে। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনায় ব্যাপক আলোড়ন ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: জলপাইগুড়িতে জাপানি এনকেফালাইটিসে মৃত্যু প্রৌঢ়ার, সতর্ক জেলা প্রশাসন
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ তিন ভিআরপি কর্মী সাইনা মুন্সি মিদ্দে, সুধা ঘোষ ও ডালিয়া অধিকারী ডেঙ্গির লার্ভা নয় অভিযোগ যাচাই করতে বিপ্লব মান্নার বাড়িতে যান। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে খবর ছিল, ওই বাড়িতে মশার লার্ভা জন্মেছে। ভেতরে গিয়ে তাঁরা বাড়ির এক কোণে রাখা শিশিতে সন্দেহজনক তরল দেখতে পান। কর্মীরা জানান, সেই জল ফেলে দিতে হবে।
ঠিক সেই মুহূর্তে হঠাৎ ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন বিপ্লব মান্না। অভিযোগ, তিনি হাতের শিশিটি ছুঁড়ে মারেন ডালিয়া অধিকারীর দিকে। তরলটি তাঁর পিঠ ও কাঁধে পড়তেই যন্ত্রণায় চিৎকার করে ওঠেন তিনি। দ্রুত তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান, আক্রান্ত কর্মীর শরীরের কিছু অংশে দগদগে ক্ষত তৈরি হয়েছে।
ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। আক্রান্ত কর্মীর সহকর্মীরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সাঁকরাইল থানার পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে অভিযুক্ত বিপ্লব মান্নাকে গ্রেফতার করে। অন্যদিকে, অভিযুক্তের স্ত্রী সোনালি মান্নার দাবি, তাঁর স্বামী দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। তিনি বলেন, বিপ্লবের চিকিৎসা চলছে। আগে কখনও এভাবে কারও ক্ষতি করেননি। ঘটনাটা পুরোপুরি অসুস্থতার কারণেই ঘটেছে। সরকারি কর্মী আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সাঁকরাইলের বিধায়ক প্রিয়া পাল। তাঁর বক্তব্য, মানুষের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার জন্য যারা মাঠে নেমে কাজ করছেন, তাঁদের উপর এভাবে আক্রমণ ভয়ানক ঘটনা। দোষীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনা জানাজানি হতেই দক্ষিণ সাঁকরাইল অঞ্চলে চাঞ্চল্য ছড়ায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকে বলছেন, ডেঙ্গি প্রতিরোধে যে কর্মীরা দিনরাত পরিশ্রম করছেন, তাঁদের নিরাপত্তা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠছে।