বিহারের পর এবার পশ্চিমবঙ্গেও ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এই খবর সামনে আসতেই উদ্বাস্তু ও মতুয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। ঠিক এই আবহেই ঠাকুরনগরে নতুন করে রাজনৈতিক আলোড়ন। মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে দড়ি টানাটানির মাঝে এবার সরাসরি হুঁশিয়ারি দিলেন বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা গোপাল শেঠ।
আরও পড়ুন: নাগরিকত্বের নামে টাকা তুলছেন শান্তনু, ২১-এর মঞ্চ থেকে বিস্ফোরক মমতাবালা
গোপালের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর বেআইনি ভাবে ‘সিএএ ক্যাম্প’ চালিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। অভিযোগ, মতুয়া কার্ড ও ধর্মীয় শংসাপত্র বিলির নামে টাকা তোলা হচ্ছে। গোপাল শেঠ জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দফতর, নির্বাচন কমিশন, রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং জেলা প্রশাসনের কাছে তুলে ধরেছেন। তবু সমাধান না হওয়ায় এবার সরাসরি কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শান্তনু ও তাঁর দাদা, বিজেপি বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর দু’জনেই আলাদা আলাদা শিবির খুলেছেন ঠাকুরনগরে। নাট মন্দির ও বাড়ির সামনে শিবিরে ভিড় জমছে মতুয়াদের। নাগরিকত্ব পাওয়ার আশায় মানুষ দলে দলে সেখানে আসছেন। শংসাপত্র বিলি করা হচ্ছে কম্পিউটার টেবিলে বসে। ফ্লেক্স ঝুলছে চারপাশে। মাইকিং করে ঘোষণা চলছে। সুব্রতর শিবির থেকেও একইভাবে সার্টিফিকেট বিলি হচ্ছে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, এই দ্বন্দ্ব কেবল মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়েই নয়, ঠাকুর পরিবারের ভিতরে প্রভাব বিস্তার এবং নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে, সেই লড়াইও। আর এই গৃহবিবাদের মাঝেই গোপাল শেঠ সক্রিয় হওয়ায় নতুন সমীকরণ তৈরি হয়েছে।সোমবার গোপাল শেঠ বলেন, বেআইনি ক্যাম্প চালিয়ে টাকা তোলা হচ্ছে। বাংলাদেশি নাগরিকদের টাকার বিনিময়ে নাগরিকত্ব দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হবেন।
শান্তনু ঠাকুর অবশ্য এর আগেই বলেছিলেন, অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সদস্যদের নথি খতিয়ে দেখেই শংসাপত্র দেওয়া হচ্ছে, যাতে তাঁরা সিএএ-র আওতায় আবেদন করতে পারেন। তবে গোপাল শেঠের হাই কোর্টে যাওয়ার হুঁশিয়ারি ঘিরে ঠাকুরবাড়ির ভেতরের দ্বন্দ্ব এবং রাজনৈতিক অঙ্ক আরও জটিল হল বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।