নিউ গড়িয়ার অভিজাত আবাসনে বৃদ্ধা বিজয়া দাসকে খুনের রহস্য উন্মোচন হল ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। তদন্তে নেমে শনিবার সকালে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বাড়ির আয়া এবং তাঁর সহযোগীকে। পুলিশের দাবি, বৃদ্ধাকে খুনের পর ওই দুই অভিযুক্ত বাড়ি থেকে সোনা-গয়না ও মূর্তি চুরি করে পালিয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে অনুমান, চুরির উদ্দেশ্যেই খুন।
আরও পড়ুন: সাড়ে ৩ মাস আগে উদ্ধার হয়েছিল দেহ, ফের ময়নাতদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
ঘটনাটি ঘটেছিল শুক্রবার সকালে। নিউ গড়িয়া সুপার মার্কেট লাগোয়া এক আবাসনের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় ৭৪ বছরের বিজয়া দাসের রক্তাক্ত দেহ। হাত-পা বাঁধা ছিল, মুখে সেলোটেপ আটকানো। পুলিশ জানিয়েছে, বৃদ্ধার স্বামী প্রসান্ত দাসকে ঘর থেকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রতিবেশীরা জানান, প্রতিদিনের মতো পরিচারিকা মাধুমিতা হালদার ডাকাডাকি করেও কোনও সাড়া না পেয়ে সন্দেহ জাগে। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। পরে পুলিশ এসে ফ্ল্যাটের সিঁড়ির ধারে বিজয়ার রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখে।
ফরেনসিক দল এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রমাণ সংগ্রহ করেন। তদন্তে প্রথম থেকেই পুলিশের নজরে আসে বাড়ির আয়া আশালতা সরদারের ভূমিকা। জেরার সময় তাঁর বয়ানে অসঙ্গতি ধরা পড়তেই তাঁকে আটক করা হয়। এরপর শনিবার ভোরে নারেন্দ্রপুর থানা এলাকার জলট্যাংক থেকে আশালতাকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ধরা হয় সহযোগী মহম্মদ জালাল মীরকেও।
পুলিশ সূত্রে খবর, আশালতার বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমায়। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিজয়া দেবীর বাড়িতে কাজ করতেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, লুঠপাটের উদ্দেশ্যেই এই খুন। তবে অন্য কোনও ব্যক্তিগত বা কারণ জড়িত আছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মৃতার ছেলে অন্য শহরে থাকেন বলে জানা গিয়েছে। বিজয়া দেবীর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। প্রসান্ত দাস এখনও চিকিৎসাধীন। পুলিশের বক্তব্য, অভিযুক্তদের আদালতে পেশ করা হবে এবং ঘটনায় আরও কেউ যুক্ত রয়েছে কি না, তারও খোঁজ চলছে। এক আধিকারিক বলেন, খুন চুরির ঘটনাটি পরিকল্পিত ছিল বলে মনে হচ্ছে। তবে তদন্তের পরই সমস্ত কিছু পরিষ্কার হবে।