সাড়ে তিন মাস আগে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জে শ্বশুরবাড়ি থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছিল বছর কুড়ির গৃহবধূ ফতেমা খাতুনের দেহ। পরিবার অভিযোগ তোলে, আত্মহত্যা নয়, ফতেমাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। প্রথম ময়নাতদন্তের রিপোর্টে সন্তুষ্ট হতে না পেরে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হন। অবশেষে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্ট দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিল।
আরও পড়ুন: দুটি ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বিস্তর ফারাক, ৩ রহস্যমৃত্যুর তদন্তে ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট
বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ জানান, আগামী ২৫ অগস্টের মধ্যে কল্যাণী এইমসে এই দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করতে হবে। এ কাজে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে নিযুক্ত করার পাশাপাশি প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণভাবে ভিডিয়োগ্রাফি করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী শুনানির আগে রিপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। আইনজীবী নবকুমার দাস ও সুমঙ্গল শীল আদালতে জানান, গত ২৯ এপ্রিল রাতে শ্বশুরবাড়ি থেকে ফতেমার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।
পরিবারের অভিযোগ, ফতেমাকে খুন করে তা আত্মহত্যার রূপ দেওয়া হয়েছে। মৃতার মা জানিয়েছেন, সেদিন রাতে শ্বশুরবাড়ি থেকে ফোনে তাঁকে জানানো হয় মেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। কিন্তু পরিবারের দাবি, মেয়েকে পণের জন্য চাপ দিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাত শ্বশুরবাড়ির লোকজন। ২০২৪ সালের এপ্রিলে ফতেমার বিয়ে হয়। পরিবারের বক্তব্য, বিয়ের সময় পণ দেওয়া হলেও শ্বশুরবাড়ি আরও টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করত। দাবি পূরণ না হওয়ায় তাঁকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের।
প্রথম ময়নাতদন্তে যা উঠে এসেছিল তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে পরিবার। তাঁদের বক্তব্য, সেই রিপোর্ট যথেষ্ট নির্ভরযোগ্য নয়। তাই ন্যায়বিচারের আশায় তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হন। গৃহবধূর মৃত্যুর সাড়ে তিন মাস পর নতুন করে ময়নাতদন্তের নির্দেশে ফের আশার আলো দেখছে নির্যাতিতার পরিবার। এখন দুই পরিবারের নজর কল্যাণী এইমসের রিপোর্টের দিকে।