চাকরিহারা শিক্ষক সুবল সোরেনের মৃতদেহ লোপাটের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুললেন আন্দোলনকারীরা। তাঁরা দাবি করেছেন, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের নির্যাতিতা চিকিৎসকের ক্ষেত্রে যেরকমভাবে তথ্যপ্রমাণ লোপাট করা হয়েছিল, ঠিক একইভাবে সুবলের দেহ নিয়ে পুলিশ চলে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। পরিবারের লোকজনকেও জানানো হয়নি। সেই পরিস্থিতিতে শববাহী গাড়ি আটকে দেন আন্দোলনকারীরা। তাঁরা দাবি করেছেন, পরিবারের অনুমতি ছাড়া দেহ নিয়ে যেতে দেওয়া হবে না। আর পুরো ঘটনার জন্য তাঁরা দায়ি করেছেন রাজ্য সরকার। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের দুর্নীতির কারণেই যোগ্য হয়েও চাকরি চলে গিয়েছিল সুবলের। সেই মানসিক চাপ সামলাতে না পারায় বেনস্ট্রোক হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
আইসিইউ না থাকায় ডেবরা থেকে কলকাতায় আনা হয়
সূত্রের খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন ৩৫ বছরের সুবল। সঙ্গে থাকতেন স্ত্রী এবং সন্তান। তারইমধ্যে সোমবার অসুস্থ হয়ে পড়েন সুবল। প্রাথমিকভাবে ডেবরা হাসপাতালে ভরতি করা হয়। কিন্তু আইসিইউ না থাকায় তাঁকে আনা হয় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই ভরতি ছিলেন। আর ভারতের ৭৯ তম স্বাধীনতা দিবসের সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।
আর পড়ুন: আধার কার্ড নিতে হবে! SIR মামলায় কমিশনকে সুপ্রিম নির্দেশ, মমতা বললেন ‘NRC হচ্ছে’
সুবলের মৃত্যুর ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে চাইছিল, উঠল অভিযোগ
চাকরিহারা শিক্ষকের স্ত্রী দাবি করেছেন, চাকরি চলে যাওয়ার পর থেকেই সুবল প্রবল মানসিক কষ্টে ভুগছিলেন। খেতে চাইতেন না ওষুধও। যিনি অনেকদিন ধরেই উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন বলে সূত্রের খবর। আর তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি ধামাচাপা দিতেই পুলিশ তড়িঘড়ি মৃতদেহ নিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছিল বলে অভিযোগ তুলেছেন আন্দোলনকারীরা।
আর পড়ুন: 'স্বাধীনতা ১৯৪৭ সালে পেয়েছি, কিন্তু….', রাতদখলে বাবাও, একসুরে গাওয়া হল 'জনগণমন'
১০ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা ও চাকরির দাবি
আর পুরো ঘটনার জন্য রাজ্য সরকারকে দুষেছেন শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী। তিনি বলেছেন, ‘(সুবলের) মৃত্যুর সবথেকে বড় দায় রাজ্য সরকার। তাদের দুর্নীতির দায় যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের ঘাড়ে করে বয়ে বেড়াতে হচ্ছে।’ সেইসঙ্গে তিনি দাবি করেছেন যে সুবলের পরিবারের এক সদস্যকে চাকরি দিতে হবে। ১০ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদানের দাবিও তুলেছেন শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক।
আর পড়ুন: অনেক জিনিসের দাম কমবে! নয়া GST কাঠামোয় ২ ধাপ উঠে যাবে, সিগারেট খরচ বাড়বে
তাঁর কথায়, ‘এই ঘটনার যাবতীয় দায় রাজ্য সরকারকে নিতে হবে। পরিবারের একজনকে চাকরি এবং ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি করছি আমরা। পাশাপাশি আমরা আবার দাবি তুলে ধরছি, কোন যোগ্য শিক্ষক শিক্ষাকর্মী যেন চাকরি থেকে বঞ্চিত না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। না হলে ভবিষ্যতে এ ধরণের বহু ঘটনার আশঙ্কা করছি আমরা। আর একটাও প্রাণ যাতে না যায় তার জন্য যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।’