সম্প্রতি কলকাতা পুরসভায় বর্ষাতি কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে পুর প্রাথমিক স্কুলে শৌচাগার সংস্কারে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে। সেই আবহে পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে অনিয়মের অভিযোগের সামনে এসেছে। ২০১৭ সালে কলকাতা পুরসভার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। সেই বিজ্ঞপ্তি ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠছে। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ এবং মেধাতালিকা নিয়েও উঠেছে একাধিক প্রশ্ন।
আরও পড়ুন: পুর স্কুল দুর্নীতিতে অভিযুক্তের চিঠি মমতাকে, দাবি সংখ্যালঘু বলে ফাঁসানো হচ্ছে
২০১৭ সালে পুরসভার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল কলকাতা পুরসভা। ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর লিখিত পরীক্ষা হয়। তাতে ১০০ জন পাশ করেছিলেন। পরের বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালে তাদের নিয়োগ পত্র দেওয়া হয়। ৬ বছর ধরে তারা শিক্ষকতা করছেন। তবে ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশনের (এনসিটিই) গাইডলাইন অনুযায়ী, এই সমস্ত শিক্ষকদের ডিএলএড অথবা বিএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হতে হবে। সেক্ষেত্রে নিয়োগের দুই বছরের মধ্যেই এই ডিগ্রি অর্জন করা বাধ্যতামূলক। অথচ দীর্ঘ সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও ওই সমস্ত শিক্ষকরা এখনও প্রশিক্ষণ নেননি। আর তাই নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বিজ্ঞপ্তি নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। অভিযোগ উঠেছে, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ নিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। ২০১৭ সালের ১ এপ্রিল এই বিজ্ঞপ্তি পুরসভার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছিল। বিজ্ঞপ্তিতে পুরসভার কমিশনারের নাম থাকলেও সই করা হয়নি। অথচ এই বিজ্ঞপ্তিতে সই থাকা বাধ্যতামূলক। আরও অভিযোগ উঠেছে, এরকম প্রশিক্ষণের কথা না বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছিল ৬ মাসের কম্পিউটার সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
এখানেই শেষ নয়, অভিযোগ উঠেছে ২০১৮ সালের মার্চ মাসে নিয়োগের চূড়ান্ত মেধা তালিকা প্রকাশ করার বিজ্ঞপ্তি জারি করা হলেও ওয়েবসাইটে সেই তথ্য দেওয়া হয়নি। এই অবস্থায় এই নিয়োগ প্রক্রিয়া বেআইনি বলে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা।
বিজেপির কাউন্সিলর সজল ঘোষ অভিযোগ করেছেন, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে তাতে কোনওভাবেই নিয়ম মানা হয়নি। যদিও ওই সময় তৎকালীন মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় অভিযোগ অস্বীকার বলেছেন, যেহেতু তারা অস্থায়ী শিক্ষক তাই তাদের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের দরকার নেই। তবে এই ইস্যুকে হাতিয়ার করতে চায়ছে বিরোধীরা।