নৃশংস জঙ্গিহানায় রক্তাক্ত হয়েছে ভূস্বর্গ! মারণাস্ত্রের ঘায়ে প্রাণ গিয়েছে অন্তত ২৬ জনের। আর, সেই খবর জানার পর থেকেই উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, এই মুহূর্তে কোলাঘাটের একাধিক পর্যটকদল কাশ্মীরের নানা জায়গায় রয়েছে। সব মিলিয়ে ওই দলগুলিতে পর্যটকদের সংখ্য়া প্রায় ১০০। ফলে যতক্ষণ না তাঁরা ঘরে ফিরছেন, স্বস্তি পাচ্ছেন না পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়, বন্ধুরা।
সংবাদমাধ্যমে উঠে আসা তথ্য অনুসারে, কোলাঘাটের বরিশা গ্রাম থেকে পর্যটকদের একটি দল কাশ্মীর বেড়াতে গিয়েছে। সেই দলে রয়েছেন প্রায় ৩০ জন। এই দলটি রওনা হয়েছিল গত ১৪ এপ্রিল। দলটির ফেরার কথা আগামী ২৭ এপ্রিল। মানে আরও অন্তত চারদিন বাকি ওই পর্যটকদের ঘরে ফিরতে। কিন্তু, তত দিন আদৌ নিরাপদে থাকবেন তো তাঁরা? তাঁদের কোনও ক্ষতি হবে না তো? সেই আশঙ্কাতেই রাতের ঘুম উড়েছে আত্মীয় পরিজনদের।
জানা গিয়েছে, বরিশা গ্রাম থেকে কাশ্মীর বেড়াতে যাওয়া পর্যটকদের দলে রয়েছেন অসীমা দাস নামে এক মহিলা ও তাঁর ছেলে। অসীমার মা কমলা তুঙ্গ কোলাঘাটেরই নতুন বাজার এলাকায় থাকেন। সংশ্লিষ্ট একটি সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিনিধিকে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ে ও নাতি মিলিয়ে প্রায় ৩০ জনের পর্যটকদলটি মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল, ২০২৫) - অর্থাৎ - যেদিন জঙ্গিহানা হয়, সেদিন পহেলগাঁওয়েই ছিল!
তাই যখন টিভিতে, খবরে জঙ্গিহানার কথা জানতে পারেন কমলা, উৎকণ্ঠায় বিহ্বল হয়ে পড়েন তিনি। উপরন্তু, যাঁরা কাশ্মীর বেড়াতে গিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে সবসময় মোবাইলে যোগাযোগও করা যাচ্ছে না। তাতে চিন্তা আরও বাড়ছে। যদিও ইতিমধ্য়েই মেয়ে, নাতি-সহ অন্যদের খবর পেয়েছেন ওই বৃদ্ধা। জানতে পেরেছেন, ওই পর্যটকদলটির কারও কোনও অনিষ্ট হয়নি। তাতে কিছুটা স্বস্তি পেলেও যতক্ষণ না সকলে সুস্থভাবে বাড়ি ফিরছেন, রাতে শান্তিতে ঘুমোতে পারছেন না আত্মীয়, পরিজনরা।
স্থানীয় ভ্রমণ সংস্থাগুলির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এলাকার অন্তত ১০০ জন মানুষ এই মুহূর্তে কাশ্মীরে আছেন। মঙ্গলবারের জঙ্গিহানার জেরে তাঁদের অনেকেই সফরসূচিতে কাটছাঁট করে ঘরের ফেরার চেষ্টা করছেন বলেও জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, আগামী দিনগুলিতে যাঁদের কাশ্মীর যাওয়ার কথা ছিল, তাঁরাও অনেকেই বুকিং বাতিল করে দিচ্ছেন। কেউ কেউ আবার কাশ্মীরের বদলে অন্য কোথাও ঘুরতে যাওয়ার বন্দোবস্ত করে দিতে বলছেন।