লিভ ট্র্যাভেল কনসেশন নিয়ে স্ত্রী এবং সন্তানদের নিয়ে জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে ঘুরতে গিয়েছিলেন পুরুলিয়ার বাসিন্দা মণীশ রঞ্জন। তিনি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা আইবি'র হায়দরাবাদ শাখায় কর্মরত ছিলেন। মঙ্গলবার দুপুরে যখন প্রাণভরে উপভোগ করছিলেন নৈসর্গিক দৃশ্য, তখনও বুঝতে পারেননি আর কিছুক্ষণ পরেই কী ঘটতে চলেছে। স্ত্রী, সন্তানদের সামনেই জঙ্গিরা গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিল মণীশকে। 'মিনি সুইৎজারল্যান্ড' ঘোরার আনন্দ পরিণত হয়েছে বিষাদে।
শুধু মণীশ রঞ্জনই নয়, একই রকম মর্মান্তিক পরিণতি ঘটেছে আরও অনেক পর্যটকের। তাঁদের মধ্যে যেমন রয়েছে বিশাখাপত্তনমের অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক কর্মী জেএস চন্দ্রমৌলি। জঙ্গি হামলার সময় ঘটনাস্থল থেকে পালানোর সময় গুলিবিদ্ধ হন তিনি। জানা গিয়েছে, ১৮ এপ্রিল চন্দ্রমৌলি, তাঁর স্ত্রী নাগামণি এবং আরও দুই দম্পতিকে নিয়ে শ্রীনগরে গিয়েছিলেন। সোমবার সন্ধ্যায় তাঁরা পহেলগাঁওয়ে পৌঁছান। এক পর্যটক জানান, জঙ্গিরা যখন চন্দ্রমৌলির উপর হামলা করে, তখন তিনি পালানোর চেষ্টা করছিলেন। তাঁকে হত্যা না করার জন্য বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও জঙ্গিরা ধাওয়া করে গুলি করে। ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর চন্দ্রমৌলির মৃতদেহ বিমানে করে বিশাখাপত্তনমে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে, পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয়েছে ছত্তিশগড়ের রায়পুরের ব্যবসায়ী দীনেশ মিরানিয়ারের। ঘটনাচক্রে মঙ্গলবারই তাঁর বিবাহবার্ষিকী ছিল। সূত্রের খবর, দীনেশকে তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের সামনে নির্বিচারে গুলি খুন করে জঙ্গিরা। স্ত্রীর মুখেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁদের সন্তানরাও আহত হয়েছে। ওই ব্যবসায়ী পরিবারের সঙ্গে বিবাহবার্ষিকী উদযাপন করতে পহেলগাঁওতে গিয়েছিলেন। সেই খবর পাওয়া মাত্রই তাঁর পরিবার রায়পুর থেকে জম্মুর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
দীনেশের পরিবার জানিয়েছে, তাঁর আত্মীয়রা জম্মুর কাছে থাকে। তাঁরই বাড়িতে একটি অনুষ্ঠান ছিল। দীনেশও সেখানে যোগ দেয়। রবিবার সকালে পুরো পরিবার চলে গিয়েছিল। সোমবার এক আত্মীয়ের বাড়িতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর মঙ্গলবার দীনেশ পহেলগাঁওয়ে পৌঁছান। দীনেশ সন্তানদের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই জঙ্গিরা তাঁদের ঘিরে ফেলে এবং হামলা চালায়। দীনেশকে তার স্ত্রী ও সন্তানদের সামনে গুলি করা হয়। দীনেশের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। চিকিৎসার জন্য তাঁকে সেনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। জানা গিয়েছে, দীনেশ ইস্পাত ব্যবসায়ী ছিলেন। ৪ ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন। তাঁর স্ত্রীই মৃত্যুর খবর পরিবারকে দিয়েছিলেন।