বাংলাদেশে নিষিদ্ধ কাশির সিরাপের বিরাট চাহিদা। আর সেই চাহিদা মেটাতে মূল ভরসা হয়ে উঠেছে সীমান্তঘেঁষা মুর্শিদাবাদ জেলা। জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় লাগাতার ধরপাকড় চালিয়ে গত ছয় মাসে পুলিশ উদ্ধার করেছে ৩১ হাজারেরও বেশি কাশির সিরাপের বোতল। যার অধিকাংশই পাচারের উদ্দেশ্যে জমা করা হয়েছিল বলে সন্দেহ পুলিশের।
আরও পড়ুন: শিলিগুড়িতে ব্রাউন সুগার তৈরির কারখানার হদিশ, উদ্ধার কোটি টাকার মাদক, ধৃত ৩
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মাদক বিরোধী দিবসে জেলা পুলিশ এই উদ্বেগজনক পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। জেলা পুলিশের তরফে আরও জানানো হয়েছে, গত ছ’ মাসে মুর্শিদাবাদে মোট ৬৪টি মাদক সংক্রান্ত মামলা রুজু হয়েছে এবং ১০৩ জন মাদক চক্রের সঙ্গে যুক্ত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুধু কাশির সিরাপই নয়, উদ্ধার হয়েছে ৬ কেজি ৩৫০ গ্রাম হেরোইন এবং প্রায় ১৫৮১ কেজি গাঁজাও। এই দিবস উপলক্ষে বহরমপুরের পুলিশ সুপারের দফতরে আয়োজন করা হয় এক সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের। হাজির ছিলেন এসপি কুমার সানি রাজ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মজিদ ইকবাল খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (লালবাগ) রাসপ্রীত সিং-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। পুলিশের তরফে একটি ভিডিয়ো দেখানো হয়, যেখানে মাদক ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলি তুলে ধরা হয়। ভিডিয়ো সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সুপার কুমার সানি রাজ জানান, মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ ধারাবাহিকভাবে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। কাশির সিরাপ থেকে শুরু করে হেরোইন, গাঁজা সবকিছুর দিকেই পুলিশের নজর রয়েছে। সীমান্ত লাগোয়া থানা এলাকাগুলিতে বিশেষ অভিযান চলছে।
অন্যদিকে, এদিনই আরও এক বড়সড় সাফল্য পেয়েছে বহরমপুর থানার পুলিশ। ফতেপুর মোড়ের কাছে নতুন বাইপাস রোডে মাঝদুপুরে একটি পণ্যবাহী গাড়ি আটক করে তারা। অভিনব পদ্ধতিতে, গাড়ির আসনের নিচে বিশেষ চেম্বার তৈরি করে পাচার করা হচ্ছিল গাঁজা। পুলিশের জালে ধরা পড়ে চালক-সহ মোট চারজন। গাড়ি থেকে উদ্ধার হয় প্রায় ১১০ কেজি গাঁজা। তবে মাদক রুখতে এত চেষ্টা সত্ত্বেও সীমান্ত পেরিয়ে নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ বাংলাদেশে পাচার হওয়া থামানো যাচ্ছে না বলেই মত পুলিশের একাংশের। মুর্শিদাবাদের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিকে তাই এখন বিশেষ নজরে রেখেছে প্রশাসন।