ঘানার সর্বোচ্চ সম্মানে ভূষিত হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পঞ্চদেশীয় সফরের প্রথম ধাপে বুধবার ঘানায় পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী।এটি পশ্চিম আফ্রিকায় তাঁর প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর। এবার সে দেশের জাতীয় সম্মান ‘দ্য অফিসার অফ দ্য অর্ডার অফ দ্য স্টার অফ ঘানা’ প্রদান করা হল তাঁকে। বিশিষ্ট রাষ্ট্রনায়কত্ব এবং প্রভাবশালী বিশ্ব নেতৃত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ এই সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে। ঘানার প্রেসিডেন্ট জন মাহামা তাঁকে এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারটি প্রদান করেন।
রাষ্ট্রীয় সম্মানে ভূষিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, 'ঘানার জাতীয় সম্মানে ভূষিত হওয়া আমার জন্য অত্যন্ত গর্ব ও সম্মানের বিষয়। আমি প্রেসিডেন্ট মহামা, ঘানা সরকার এবং ঘানার জনগণের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।১৪০ কোটি ভারতীয়ের পক্ষ থেকে আমি বিনীতভাবে এই সম্মান গ্রহণ করছি। এই সম্মান আমাদের তরুণদের আকাঙ্ক্ষা, তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রতি, আমাদের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও ঐতিহ্যের প্রতি এবং ভারত ও ঘানার মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্কের প্রতি উৎসর্গ করছি।' এক্স-এ পোস্টে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দ্য অফিসার অফ দ্য অর্ডার অফ দ্য স্টার অফ ঘানা সম্মানে ভূষিত হয়ে আমি গর্বিত।' অন্যদিকে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর বিশিষ্ট রাষ্ট্রনায়কত্ব এবং প্রভাবশালী বৈশ্বিক নেতৃত্বের জন্য এই পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-মার্কিন সেনার গোপন তথ্য ফাঁস! ২ চিনা গুপ্তচর গ্রেফতার, কড়া প্রতিক্রিয়া বেজিংয়ের
এই সম্মান গ্রহণের সময় প্রধানমন্ত্রী মোদী ঘানার সরকার এবং জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ভারত এবং ঘানার মধ্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং ঐতিহ্যের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা সম্পর্ক দুই দেশের বন্ধুত্বকে আরও গভীর করবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই পুরস্কার তাঁর উপর ভারত-ঘানা সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব অর্পণ করেছে। তাঁর মতে, এই ঐতিহাসিক সফর দুই দেশের সম্পর্কে নতুন গতি সঞ্চার করবে।ঘানাকে একটি প্রাণবন্ত গণতন্ত্র এবং পশ্চিম আফ্রিকার আশার আলো হিসেবে প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এই সফরে দুই দেশের মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, 'আজ আমরা ঘানার জন্য আইটিইসি এবং আইসিসিআর স্কলারশিপ দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তরুণদের বৃত্তিমূলক শিক্ষার জন্য একটি দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করা হবে। কৃষি খাতে, আমরা প্রেসিডেন্ট মহামার ফিড ঘানা কর্মসূচিতে সহযোগিতা করতে পেরে খুশি হব।'
এর আগে প্রধানমন্ত্রী মোদী ঘানার প্রেসিডেন্ট মাহামার সঙ্গে বিস্তৃত আলোচনা করেন। যার ফলে ভারত ও ঘানার সম্পর্ককে ‘ব্যাপক অংশীদারিত্ব’-এর স্তরে উন্নীত করা হয়। এই আলোচনায় বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, কৃষি, প্রতিরক্ষা এবং ডিজিটাল অবকাঠামোর মতো ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ঘানার সহযোগিতার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন যে, দুই দেশ সন্ত্রাসবাদ দমনে সহযোগিতা আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সংস্কারের ক্ষেত্রেও দুই দেশ একই দৃষ্টিভঙ্গি ভাগ করে নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ঘানার সংসদে ভাষণ দেন এবং ভারতীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময় করেন, যেখানে তিনি দুই দেশের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের উপর জোর দেন।
আরও পড়ুন-মার্কিন সেনার গোপন তথ্য ফাঁস! ২ চিনা গুপ্তচর গ্রেফতার, কড়া প্রতিক্রিয়া বেজিংয়ের
অন্যদিকে ঘানার বিদেশমন্ত্রী স্যামুয়েল ওকুদজেতো আব্লাকওয়া বলেন, এই সম্মান ভারত ও ঘানার গভীর সম্পর্ক এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধার প্রতীক। তিনি উল্লেখ করেন, ভারত বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র এবং ঘানা আফ্রিকার একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে পরিচিত। এই পুরস্কার ভারতের ৪৫০ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা এবং দুই দেশের মধ্যে ৩ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ও ২ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের প্রেক্ষাপটে প্রদান করা হয়েছে।