সল্টলেকে এসএসসি কার্যালয়ের সামনে এখনও অবস্থানে অনড় 'যোগ্য' চাকরিহারা শিক্ষকরা। তাঁদের দাবি, এসএসসি কর্তৃপক্ষ তথা সরকার পক্ষকে যোগ্য এবং অযোগ্য চাকরিপ্রাপকদের তালিকা প্রকাশ করতেই হবে।
এই প্রেক্ষাপটে গতকাল (মঙ্গলবার - ২২ এপ্রিল, ২০২৫) রাত থেকেই জেলায় জেলায় 'যোগ্য' চাকরিপ্রাপকদের নামের তালিকা পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করা হল! স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) সূত্রের দাবি অন্তত তেমনটাই। শোনা যাচ্ছে, সেই 'যোগ্য' তালিকায় নাম রয়েছে ১৫,৪০৩ জন শিক্ষক শিক্ষিকার। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি এটাই প্রশাসনের তরফে পেশ করা চূড়ান্ত 'যোগ্য়' তালিকা? এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কিছু ঘোষণা না করা হলেও সংবাদমাধ্যমে উঠে আসছে নানা তথ্য।
প্রসঙ্গত, যোগ্য ও অযোগ্যদের মধ্যে বিভেদ স্পষ্ট করতে না পারার জন্যই প্রায় ২৬ হাজার (২৫,৭৩৫) শিক্ষক, শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী ও অশিক্ষক কর্মচারীর নিয়োগই বাতিল হয়ে যায়। কারণ, সুপ্রিম কোর্ট এসএসসি-র ২০১৬ সালের প্রায় সম্পূর্ণ প্যানেল খারিজ করে দেয়। এই প্রেক্ষাপটে শুরু হয়ে চাকরি ও সম্মান ফেরতের দাবিতে 'যোগ্য'দের আন্দোলন।
হিসাব বলছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে যত জনের চাকরি বাতিল হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে শিক্ষক শিক্ষিকার সংখ্যা প্রায় ১৯ হাজার (১৮,৪১৮)। তাঁদের মধ্যে আবার যাঁরা 'দাগি' বা যাঁদের নিয়োগ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে, তাঁদের বাদ দিয়ে আগেই ১৭,২০৬ জন শিক্ষক শিক্ষিকার একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। সেই তালিকা গত ১৭ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টে জমা দেয় পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্যদ।
শীর্ষ আদালতের কাছে তাদের দাবি ছিল, অন্তত পড়ুয়াদের স্বার্থে এই ১৭,২০৬ জন শিক্ষক শিক্ষিকাকে স্কুলে যেতে দেওয়া হোক। আদালত সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে জানায়, এই শিক্ষক শিক্ষিকারা স্কুলে যেতে পারবেন, পড়াতে পারবেন এবং মাসিক বেতনও পাবেন। কিন্তু, সেই প্রক্রিয়া চলবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর (২০২৫) পর্যন্ত। তার মধ্যেই কর্তৃপক্ষকে নতুন করে সমস্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া সেরে ফেলতে হবে।
এই প্রেক্ষাপটে যোগ্য ও অযোগ্যদের তালিকা জনসমক্ষে আনার দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। 'যোগ্য'দের দাবি, তাঁদের চাকরিতে ফেরাতে হবে সসম্মানে। পাশাপাশি, 'অযোগ্য'দের অবিলম্বে ছাঁটাই করতে হবে।
এই অবস্থায় নতুন করে 'যোগ্য' শিক্ষক শিক্ষিকাদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। পূর্ববর্তী তালিকাভুক্ত ১৭,২০৬ জনের মধ্যে থেকে আরও ১,৮০৩ জনকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলত - নতুন তালিকায় ঠাঁই পেয়েছেন ১৫,৪০৩ জন। সেই তালিকা ইতিমধ্যেই জেলার ডিআই অফিসগুলিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাহলেই এটিই প্রশাসনের তরফে চূড়ান্ত তালিকা? রইল উত্তরের অপেক্ষা।