ফ্লোরিডায় কর্মরত ছিলেন কলকাতার বাসিন্দা বিতান অধিকারী। দেশে ফিরে কয়েকদিনের জন্য় স্ত্রীকে নিয়ে গিয়েছিলেন কাশ্মীরে। বাড়িতে অপেক্ষায় ছিল গোটা পরিবার। ফিরলেন তিনি। ফুলে ঢাকা কফিনে। চারদিকে উঠল স্লোগান পাকিস্তান মুর্দাবাদ। চোখের সামনে স্বামীকে খুন হতে দেখেছেন স্ত্রী। সেই স্বামীর নিথর দেহ নিয়ে তিনি ফিরলেন। অঝোরে কান্না।
কলকাতায় ফিরে কী বললেন তিনি?
কলকাতায় ফেরার পরে বিমানবন্দরেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। শুভেন্দু অধিকারী তাঁর বাচ্চাকে কোলে তুলে নেন। তাঁর স্ত্রী বলেন, আমার হাজব্যান্ড আপনাদের খুব মানত স্যার।
শুভেন্দু বলেন, হিন্দুস্তানে হিন্দুকে খুন করবে! গাজা শেষ হয়েছে। ইজরায়েল শেষ করেছে। আমরাও শেষ করব। মোদীর শিষ্য আছি। বলেন শুভেন্দু
এদিকে বিতানের স্ত্রী কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন বাবা শেষ। ওর চোখের সামনে বাবাকে…স্যার আমি আপনার ভরসায় এসেছি।
অগ্নিমিত্রা নানাভাবে তাঁকে সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
স্ত্রী সোহিনী ও পুত্রকে নিয়ে কাশ্মীর বেড়াতে গিয়েছিলেন বিতান। ফ্লোরিডায় ফেরার আগে কাশ্মীর ট্যুর। কিন্তু সব কিছু শেষ করে দিল জঙ্গিরা। গত ১৬ এপ্রিল কাশ্মীর বেড়াতে গিয়েছিলেন বিতান। কলকাতার পাটুলির বাসিন্দা। ২৪ এপ্রিল তাঁদের কলকাতায় ফেরার কথা ছিল। ফিরল গোটা পরিবার। কিন্তু বিধ্বস্ত, শোকগ্রস্ত। সব কিছু ওলটপালট হয়ে গিয়েছে। সব কিছু যেন এক লহমায় শেষ করে দিয়েছে জঙ্গিরা।
২২ এপ্রিল পরিবার নিয়ে গিয়েছিলেন পহেলগাঁওতে। আর সেখানেই গণহত্যা চালায় জঙ্গিরা। গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় বিতানের শরীর। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাঁচানো যায়নি। বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী ওই পরিবারটির পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
বুধবার বিমানবন্দরে পৌঁছায় বিতানের নিথর দেহ। কান্নায় ভেঙে পড়েন স্ত্রী। চূড়ান্ত অসহায় অবস্থা। তিনি বার বার বলতে থাকেন শুভেন্দু অধিকারী, আপনাদের ভরসায় স্যার।
বিতানের সন্তানকে কোলে তুলে নেন শুভেন্দু। এরপর তিনি স্লোগান তোলেন পাকিস্তান মুর্দাবাদ। সেই স্লোগানে গলা মেলান অনেকেই।
এরপর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় পাটুলির বাড়িতে। শোকে পাথর গোটা পাড়া। অঝোরে কাঁদছেন পরিজনরা।ফুলে ঢাকা কফিন। অনেকেই স্বান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সরকার কী কী ব্যবস্থা নিচ্ছে সেকথাও আলোচনা হচ্ছে স্থানীয়দের মধ্য়ে। এই ঘটনার পেছনে কার হাত থাকতে পারে এমন নানা আলোচনা। তবে পরিবার জানে আর কোনওদিন ফিরবে না তাদের প্রিয় বিতান।
কেন আমাদের বাঁচিয়ে রাখলে? প্রশ্ন বিতানের মায়ের।